নারীর উপর যৌন নির্যাতন আর না
নারীর উপর সহিংতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য ১৯৮১ সালে ল্যাটিন আমেরিকার নারীদের সম্মেলনে ২৫ নভেম্বরকে ‘নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ দিবস’ ঘোষণা করা হয়। ১৯৯৩ সালে ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব মানবাধিকার সম্মেলনে এ দিবসটি স্বীকৃতি পায় এবং তখন থেকে বিভিন্ন দেশে দিবসটি পালন করা হয়। নারীপক্ষ ১৯৯৭ সাল থেকে প্রতি বছর একটি নির্দিষ্ট প্রতিপাদ্য নিয়ে দিবসটি পালন করে আসছে কখনো এককভাবে, কখনো বন্ধু সংগঠনকে সাথে নিয়ে। এ বছর নারীপক্ষ দিবসটি পালন করছে বাংলাদেশের তৈরিপোশাক কারখানার নারী শ্রমিকদের অধিকার আদায় ও নির্যাতন হ্রাসের লক্ষ্যে গঠিত পাঁচটি সংগঠনের মিলিত উদ্যোগ ‘সজাগ’ এর মাধ্যমে। ‘সজাগ’ এর কর্মকান্ডে আর্থিক সহযোগিতা দিচ্ছে গেøাবাল ফান্ড ফর উইমেন।
গত ২০ বছরের প্রতিপাদ্য’র মধ্যে রয়েছে, “নারীর প্রতি সহিংসতা: নারীর বিকাশের পথে অন্তরায়”, “উত্যক্তকরণ নারীর সামাজিক বিকাশ ও উন্নয়নের অন্তরায়”, “পরিবারে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে সর্বস্তরে কার্যকর ব্যবস্থা চাই”, “ধর্ষণ- উত্তর মেডিকো-লিগ্যাল পরীক্ষা স্থানীয় পর্যায়ে বাস্তবায়ন নিশ্চিতকরণ”, “বাল্য বিয়ে রোধ কর, নারী নির্যাতন বন্ধ কর”, “আত্মহত্যা করা প্রতিবাদ নয়, পরাজয়”, “নারীর উপর যৌন নির্যাতন: প্রতিবাদ করুন, প্রতিরোধ গড়–ন”, ইত্যাদি। গভীর অনুধাবন থেকে বিষয়গুলো মানুষের মধ্যে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা হয়েছে কিন্তু নারী অতীতে যে অবস্থায় দাঁড়িয়েছিল বর্তমানে আজকের নারীর উপর সহিংসতার চিত্র দেখে মনে হচ্ছে, নারীর অবস্থানগত পরিবর্তনের পথ আরো দুর্গম। ২০১৭ সালে এসেও নারী প্রতিনিয়ত যৌন আক্রমণের হুমকি, যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। প্রতিদিন সংবাদ মাধ্যমে তা প্রকাশ পাচ্ছে। সারা বিশ্বেই ঘরে, বাইরে, রাস্তাঘাটে, যানবাহনে, কর্মক্ষেত্রে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, যুদ্ধক্ষেত্রে, দুর্যোগে-দুর্বিপাকে, এমন কি আনন্দানুষ্ঠানেও নারী যৌন নিপীড়ন, নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। সকল বয়সের, সকল শ্রেণি-পেশার নারীই এই আক্রমণের ঝুঁকিতে আছেন। আমরা এর অবসান চাই, সুস্থভাবে, নিরাপদে বাঁচতে চাই; তাই নারীপক্ষ’র এবারের প্রতিপাদ্য “নারীর উপর যৌন নির্যাতন আর না।”
গত ৭ আগস্ট ২০১৭ দৈনিক সমকাল পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে বাংলাদেশ পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি-জুন ২০১৭ পর্যন্ত সারাদেশে ধর্ষণের মামলা হয়েছে ১ হাজার ৯১৪টি। কেবল এপ্রিল-জুন ২০১৭ ধর্ষণের মামলা হয়েছে ১ হাজার ১০৯টি, অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ১২টি ধর্ষণের মামলা রুজু হয়েছে। প্রকৃত ঘটনার সংখ্যা হয়ত আরো অনেক বেশী। বিভিন্ন সূত্রমতে, ২০১৭ সালে আগস্ট মাস পর্যন্ত ৩৬২টি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। আরও ৪৬ জন নারী ও শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ১৬ জন নারীকে। ধর্ষণের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন পাঁচজন নারী।
আমাদের কর্মজীবী নারীদের একটি বড় অংশ শ্রমিক, বিশেষত তৈরিপোশাক কারখানার শ্রমিক। কারখানায় যাওয়া-আসার পথে তাদের উপর যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের কিছু কিছু ঘটনা আমরা পত্রপত্রিকা ও প্রচারমাধ্যমে জানতে পারি। কারখানার ভিতরে নারী শ্রমিকরা কতটা নিরাপদ সে বিষয়ে গবেষণা প্রয়োজন।
নারীর উপর সহিংসতা, যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণ কেবলমাত্র কোন ব্যক্তির একক বা বিচ্ছিন্ন কোন অপরাধের বিষয় নয়। এর মূলে রয়েছে নারীকে মানুষ হিসেবে গণ্য না করার চিরাচরিত মানসিকতা, দৃষ্টিভঙ্গী ও সংস্কৃতি। প্রাচীনকাল থেকে সমাজের চিন্তা-চেতনা ও দৃষ্টিভঙ্গী নারীকে সর্বদা অধস্তন ও অধীনস্ত ভেবে আসছে। তার সাথে যেকোন ধরনের নিপীড়ন-নির্যাতন করে সহজেই পার পাওয়া যায়। এই প্রাচীন এবং প্রচলিত সমাজচিন্তা ও আচরণের কোন মৌলিক পরিবর্তন আজও হয়নি। আজ পর্যন্ত কোন সরকার, ক্ষমতাসীন দল বা ব্যক্তিবর্গ এর ফলপ্রসূ বিহিত করেনি। ফলশ্রæতিতে নারীর উপর অহরহ যৌন আক্রমণ, ধর্ষণ, নির্যাতন, নিপীড়ন, উত্যক্তকরণ ও অসম্মানজনক আচরণ ঘটেই চলেছে। অপরদিকে নির্যাতনের শিকার হওয়ার জন্য নারীকেই দোষারোপ করা হয়। নারীর পোশাক-পরিচ্ছদ, চলাফেরা, ইত্যাদি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। যে চিন্তা-চেতনা, দৃষ্টিভঙ্গী ও সংস্কৃতি নারীর প্রতি এইসকল আচরণ করার প্রবণতা তৈরি করে এবং তা যথাযথ বলে যুক্তি উত্থাপন করে, তা পরিবর্তনের জন্য আমাদের প্রত্যেককে প্রতিনিয়ত এই মানসিকতা, আচরণ ও সংস্কৃতিকে প্রতিহত করতে হবে। এধরনের আচরণ যেখান থেকেই আসুক, এর বিরুদ্ধে আমাদের শক্তিশালী প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
আমরা বিশ্বাস করি, নারীর প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গী ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি নারী নির্যাতন প্রতিরোধে প্রধান অন্তরায়। এটা দোষী ব্যক্তিকেই প্রশ্রয় দেয়। তাই, মানসিক শক্তিতে বলীয়ান হয়ে দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে এই অপরাধের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। এই প্রতিবাদ-প্রতিরোধে আমরা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রত্যেকে প্রত্যেকের পাশে দাঁড়াব। যৌন নির্যাতনের শিকার নারীকে দোষারোপ না করে তার প্রতি সহমর্মী হব, তাঁর পাশে দাঁড়াব ও তাকে ন্যায়বিচার পেতে সহযোগিতা করব। নিজে উদ্যোগ নিব, অন্যের উদ্যোগে সামিল হব।
আসুন, আমরা সকলে মিলে নারীর উপর যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হই। নারীর জন্য নিরাপদ ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলতে জোর আওয়াজ তুলি, “নারীর উপর যৌন নির্যাতন, আর না!!”
কর্মসূচি
দিন-ক্ষণ: ২১ অগ্রহায়ণ ১৪২৪/৫ ডিসেম্বর ২০১৭, মঙ্গলবার বিকেল ৪টা-৫টা।
স্থান: রবীন্দ্র সরোবর (ধানমন্ডি)
আপনিও এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করে নারীর উপর যৌন নির্যাতন বন্ধে একাত্ম হোন।
নারীপক্ষ
ঘোষণাপত্র
নারীর উপর সহিংতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার জন্য ১৯৮১ সালে ল্যাটিন আমেরিকার নারীদের সম্মেলনে ২৫ নভেম্বরকে ‘নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ দিবস’ ঘোষণা করা হয়। ১৯৯৩ সালে ভিয়েনায় অনুষ্ঠিত বিশ্ব মানবাধিকার সম্মেলনে এ দিবসটি স্বীকৃতি পায় এবং তখন থেকে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশে দিবসটি পালন করা হয়।
বর্তমানে নারীর উপর সহিংসতার চিত্র দেখে মনে হচ্ছে, নারীর অবস্থানগত পরিবর্তনের পথ আরো দুর্গম। ২০১৭ সালে এসেও নারী প্রতিনিয়ত যৌন আক্রমণের হুমকি, যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। প্রতিদিন সংবাদ মাধ্যমে তা প্রকাশ পাচ্ছে। সারা বিশ্বেই ঘরে, বাইরে, রাস্তাঘাটে, যানবাহনে, কর্মক্ষেত্রে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, যুদ্ধক্ষেত্রে, দুর্যোগে-দুর্বিপাকে, এমন কি আনন্দানুষ্ঠানেও নারী যৌন নিপীড়ন, নির্যাতন ও ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। সকল বয়সের, সকল শ্রেণি-পেশার নারীই এই আক্রমণের ঝুঁকিতে আছেন। আমরা এর অবসান চাই। সুস্থভাবে, নিরাপদে বাঁচতে চাই। তাই আমাদের এই অনুষ্ঠানের প্রতিপাদ্য, “নারীর উপর যৌন নির্যাতন আর না।”
গত ৭ আগস্ট ২০১৭ দৈনিক সমকাল পত্রিকায় প্রকাশিত খবরে বাংলাদেশ পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারি-জুন ২০১৭ পর্যন্ত সারাদেশে ধর্ষণের মামলা হয়েছে ১ হাজার ৯১৪টি। কেবল এপ্রিল-জুন ২০১৭ ধর্ষণের মামলা হয়েছে ১ হাজার ১০৯টি, অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ১২টি ধর্ষণের মামলা রুজু হয়েছে। প্রকৃত ঘটনার সংখ্যা হয়ত আরো অনেক বেশী । বিভিন্ন সূত্রমতে, ২০১৭ সালে আগস্ট মাস পর্যন্ত ৩৬২টি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। আরও ৪৬ জন নারী ও শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ১৬ জন নারীকে। ধর্ষণের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছেন পাঁচজন নারী।
আমাদের কর্মজীবী নারীদের একটি বড় অংশ শ্রমিক, বিশেষত তৈরিপোশাক কারখানার শ্রমিক। ঘরে-বাইরে, কারখানায় যাওয়া-আসার পথে তাদের উপর যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের কিছু কিছু ঘটনা আমরা পত্রপত্রিকা ও প্রচারমাধ্যমে জানতে পারি কিন্তু কারখানার ভিতরে নারী শ্রমিকের পরিস্থিতি আমরা জানি না। আমাদের জানামতে এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত সরকারি কোন গবেষণা বা জরীপ হয়নি। সংশ্লিষ্ট কোন সরকারি বা বেসরকারি কর্তৃপক্ষের কোন বক্তব্যও আমরা পাইনি; তবে এই শ্রমিকদের সাথে যুক্ত কিছু কিছু সংগঠন ও ব্যক্তির কাছে কিছু তথ্য-উপাত্ত থাকতে পারে, যা আমরা জানতে পারিনি ।
বিজিএমইএ সূত্রে, দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী প্রধান এই খাতটির শ্রমিকদের শতকরা প্রায় ৮০ জনই নারী। তাদের জীবনের নিরাপত্তার জন্য তো বটেই, দেশের অর্থনীতির স্বার্থেও এই সার্বিক পরিস্থিতি জানা এবং তা প্রতিকারে জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরী।
নারীর উপর সহিংসতা, যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণ কেবলমাত্র কোন ব্যক্তির একক বা বিচ্ছিন্ন কোন অপরাধের বিষয় নয়। এর মূলে রয়েছে নারীকে মানুষ হিসেবে গণ্য না করার চিরাচরিত মানসিকতা, দৃষ্টিভঙ্গী ও সংস্কৃতি। প্রাচীনকাল থেকে সমাজের চিন্তা-চেতনা ও দৃষ্টিভঙ্গী নারীকে সর্বদা অধস্তন ও অধীনস্ত ভেবে আসছে। নারীর সাথে যেকোন ধরনের নিপীড়ন-নির্যাতন করে সহজেই পার পাওয়া যায়। এই প্রাচীন এবং প্রচলিত সমাজচিন্তা ও আচরণের কোন মৌলিক পরিবর্তন আজও হয়নি। আজ পর্যন্ত কোন সরকার, ক্ষমতাসীন দল বা ব্যক্তিবর্গ এর ফলপ্রসূ বিহিত করেনি। ফলশ্রæতিতে নারীর উপর অহরহ যৌন আক্রমণ, ধর্ষণ, নির্যাতন, নিপীড়ন, উত্যক্তকরণ ও অসম্মানজনক আচরণ ঘটেই চলেছে। অপরদিকে নির্যাতনের শিকার হওয়ার জন্য নারীকেই দোষারোপ করা হয়। নারীর পোশাক-পরিচ্ছদ, চলাফেরা, ইত্যাদি নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। প্রকৃতপক্ষে তথাকথিত শালীন পোশাক চলাফেরা যে সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ এর প্রমান ২০১৭ সালে ঘটে যাওয়া তনু হত্যাসহ বহু ঘটনা। আর্থিক স্বচ্ছলতা বা স্বাবলম্বিতাও নারীকে সুরক্ষা দিতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষিকা রুমানা মঞ্জুর বা বিত্তশালী পরিবারের মেয়ে শাজনীন এর উদাহরণ। তৈরিপোশাক শিল্পের শ্রমিক নারীরা হয়তো আর্থিকভাবে কিছুটা স্বাবরম্বী হয়েছেন কিন্তু তাদের পারিবারিক ও সামাজিক অবস্থানের কোন পরিবর্তন নেই।
যে চিন্তা-চেতনা, দৃষ্টিভঙ্গী ও সংস্কৃতি নারীর প্রতি এইসকল আচরণ করার প্রবণতা তৈরি করে এবং তা যথাযথ বলে যুক্তি উত্থাপন করে, তা পরিবর্তনের জন্য আমাদের প্রত্যেককে প্রতিনিয়ত এই মানসিকতা, আচরণ ও সংস্কৃতিকে প্রতিহত করতে হবে। এধরনের আচরণ যেখান থেকেই আসুক, এর বিরুদ্ধে আমাদের শক্তিশালী প্রতিবাদ-প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
আমরা মনে করি, নারীর সম-মর্যাদা না দেওয়া, তার প্রতি ন্যেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গী ও বিচারহীনতা নারী নির্যাতন প্রতিরোধে প্রধান অন্তরায়। এটা দোষী ব্যক্তিকেই প্রশ্রয় দেয়। তাই, মানসিক শক্তিতে বলীয়ান হয়ে দৃঢ় প্রত্যয়ের সাথে এই অপরাধের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। এই প্রতিবাদ-প্রতিরোধে আমরা নারী-পুরুষ নির্বিশেষে প্রত্যেকে প্রত্যেকের পাশে দাঁড়াব। যৌন নির্যাতনের শিকার নারীকে দোষারোপ না করে তার প্রতি সহমর্মী হব, তাঁর পাশে দাঁড়াব। তাকে ন্যায়বিচার পেতে সহযোগিতা করব। নিজে উদ্যোগ নিব, অন্যের উদ্যোগে সামিল হব। সবাই মিলে আওয়াজ তুলব, “নারীর উপর যৌন নির্যাতন, আর না!!”
আসুন, আমরা সকলে মিলে নারীর উপর যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হই। নারীর জন্য নিরাপদ ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলতে আমাদের দাবি,
* নির্যাতন বা ধর্ষণের শিকার অনেক নারী ও তার পরিবার সামাজিক হেনস্তার ভয়ে পুরো ঘটনা চেপে যান। এতে অভিযুক্ত আরও প্রশ্রয় পায়, অপরাধ সংঘটনে উৎসাহিত হয়। তাই সকল প্রকার ভয়ভীতি, সংস্কার থেকে বেরিয়ে অপরাধকে জনসমক্ষে নিয়ে আসতে হবে। ভুক্তভোগী নারী ও তার পরিবারকে আইনী পদক্ষেপ নিতে সাহায্য করতে হবে
* থানায় মামলা নিতে টালবাহানা ও নির্যাতনের শিকার নারীকে হেনস্তা করা থেকে বিরত রাখতে কর্তৃপক্ষকে আন্তরিক ও তৎপর হতে হবে
* ধর্ষণ ঘটনায় জড়িতরা তাদের রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও আর্থিক ক্ষমতা ব্যবহার করে। আইনের শাসন নিশ্চিত করে এই অবস্থা বদলাতে হবে
* ২০০৯ সালে উচ্চ আদালত কর্তৃক প্রদত্ত নির্দেশনা অনুযায়ী সকল প্রতিষ্ঠানে যৌন নিপীড়ন প্রতিরোধ বিধিমালা প্রণয়ন এবং নিপীড়ন বিরোধী অভিযোগ সেল গঠন ও তা কার্যকর রাখতে হবে
* নারী ও মেয়েশিশুর উপর ধর্ষণ, অত্যাচার, নির্যাতনের ঘটনা প্রতিরোধে চিরস্থায়ী সুফল পেতে নারীকে মানুষ হিসেবে চিনতে, জানতে ও সম্মান করতে স্কুল-কলেজ, ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিখানোর উদ্যোগ নিতে হবে
* সরকারি-বেসরকরি, ব্যক্তিক ও সামাজিক উদ্যোগের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে এই চেতনা জাগ্রত করতে হবে যে, ধর্ষণের শিকার ব্যক্তি অপরাধী নয় বা এতে তার সম্মান নষ্ট হয় না; বরং অপরাধী হলো ধর্ষণকারী এবং তারই সম্মান নষ্ট হয়।