Select Page
২০২১-১১-১৪
ধর্ষণের ঘটনায় ৭২ ঘন্টা পেরিয়ে গেলে পুলিশকে মামলা না নিতে বিচারকের পর্যবেক্ষণ প্রদানে নারীপক্ষ ক্ষুব্ধ ও হতাশ

স্মারকনং- না.প- ১১/২০২১- ৫৫৯

২৯ কার্তিক ১৪২৮/ ১৪ নভেম্বর ২০২১

প্রতিবাদ বিবৃতি
ধর্ষণের ঘটনায় ৭২ ঘন্টা পেরিয়ে গেলে পুলিশকে মামলা না নিতে বিচারকের পর্যবেক্ষণ প্রদানে নারীপক্ষ ক্ষুব্ধ ও হতাশ


ঢাকার রেইনট্রি হোটেলে দুই তরুণীকে ধর্ষণ মামলার রায় প্রদানকালে বিচারক পুলিশকে পর্যবেক্ষণ হিসেবে বলেছেন যে, ধর্ষণের পর ৭২ ঘন্টা পেরিয়ে গেলে যেন মামলা না নেয়া হয়, কারণ ৭২ ঘন্টা পেরিয়ে গেলে ধর্ষণের আলামত খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়। এই পর্যবেক্ষণে তিনি আরো মন্তব্য করেছেন যে, এই তরুণীদ্বয় আগে থেকেই যৌন কর্মে অভ্যস্ত। একটি দায়িত্বশীল পদে থেকে বিচারকের এই দায়িত্বজ্ঞানহীন ও ধৃষ্টতাপূর্ণ মন্তব্যে নারীপক্ষ ভীষণভাবে ক্ষুব্ধ ও হতাশ। নারীপক্ষ এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

ধর্ষণ একটি ফৌজদারী অপরাধ এবং ফৌজদারী অপরাধের বিরুদ্ধে মামলা করার কোন সময়সীমা বাংলাদেশের প্রচলিত আইনে বেঁধে দেয়া নেই, তাই এই পর্যবেক্ষণ সম্পূর্ণরূপে আইন বহির্ভূত, অবমানাকর এবং একতিয়ারবহির্ভূত। এই পর্যবেক্ষণের সুযোগ নিয়ে ধর্ষণকারী বা তার পক্ষ ধর্ষণের শিকার নারীকে কোনভাবে ৭২ ঘন্টা আটকে রাখতে পারলে বা মামলা করা থেকে বিরত রাখতে পারলেই সে আর আইনের দ্বারস্থ হতে পারবে না। মেডিকেল পরীক্ষার প্রতিবেদন ধর্ষণ মামলার একমাত্র প্রমাণ নয়, পারিপার্শিক আরো অনেক তথ্য-প্রমান থাকে, যা এই মামলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

বিচারকের কাজ হলো অপরাধের বিচার করা, অপরাধের শিকার ব্যক্তির চরিত্র বিশ্লেষণ করা নয়। তাছাড়া, কেউ পূর্বে যৌন কর্ম করে থাকলেও তার সাথে কারো জোর করে যৌন কর্ম করা বা ধর্ষণ করার অধিকার জন্মায় না। কোন নারী কখন কার সাথে যৌন কর্ম করবে বা করবে না সেটি সম্পূর্ণ তার নিজস¦ সিদ্ধান্ত ও অধিকার। কাজেই বিচারকের এই পর্যবেক্ষণ ধর্ষণ অপরাধের বিচার প্রাপ্তির অধিকারকে খর্ব করবে, যা নারীর মানবাধিকারেরও পরিপন্থি। নারীপক্ষ অনতিবিলম্বে বিচারকের এই পর্যবেক্ষণ প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছে।

তামান্না খান পপি
আন্দোলন সম্পাদক
নারীপক্ষ।

Pin It on Pinterest

Share This