Select Page
২০২০-১১-২২
ধর্ষণের জন্য নারীবাদ, নারীর পোশাক বা চাল-চলন নয়- দায়ী আপনাদের দৃষ্টিভঙ্গী ও আচরণ

স্মারকনং- না.প- ১১/২০২০- ১৮৯

৭ অগ্রহায়ণ ১৪২৭/২২ নভেম্ববর ২০২০


প্রতিবাদ বিবৃতি
ধর্ষণের জন্য নারীবাদ, নারীর পোশাক বা চাল-চলন নয়- দায়ী আপনাদের দৃষ্টিভঙ্গী ও আচরণ


পত্রিকান্তরে প্রকাশ, সম্প্রতি বগুড়া- ৭ আসনের সংসদ সদস্য মো.রেজাউল করিম বাবলু জাতীয় সংসদে তার বক্তব্য প্রদানকালে বলেছেন, “দেশে ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে গেছে এবং এরজন্য দায়ী নারীবাদীরা”। তিনি আরো বলেছেন, “অবশ্যই ধর্ষণের সঙ্গে মেয়েদের টি-শার্ট পরে রাস্তায় বের হওয়ার সম্পর্ক আছে”। আমরা তার এই বক্তব্যে বিষ্মিত ও হতাশ। আমরা আরো বিষ্মিত হয়েছি, সেই সময় মাননীয় স্পিকার বা অন্য কোন সংসদ সদস্য তার এই বক্তব্যের প্রতিবাদ করেননি! দেশের আইনসভার একজন সদস্য কি করে এই ধরণের পশ্চাদপদ ও কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেয়ার সুযোগ পান? নারীপক্ষ এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।

দ্যা ডেইলি স্টারের সাথে এক সাক্ষাৎকারে উক্ত সংসদ সদস্য আরো বলেছেন, “নারীরা সাবলীল পোশাক না পরে বা অশালীন পোশাক পরে রাস্তায় বের হলে কু-রুচি সম্পন্ন মানুষ তাদের (নারীদের) কু-দৃষ্টিতে দেখে”। অর্থাৎ, মূল কারণ ‘কু-রুচি’ এবং ‘কু-দৃষ্টি’। তাহলে, নারীকে ঘরবন্দী বা পোশাকবন্দী করা নয়, এই ‘কু-রুচি’ এবং ‘কু-দৃষ্টি’ দূর করাই জরুরী।

নারীর উপর যৌন সহিংসতা ও ধর্ষণের জন্য নারীবাদ, নারীর পেশাক বা চাল-চলন নয়, দায়ী আপনাদের দৃষ্টিভঙ্গী ও মানসিকতা। দেশের আইন প্রণেতারা যখন নারীর প্রতি এইধরনের দৃষ্টিভঙ্গী ও মানসিকতা পোষণ করেন তখন সেই দেশের নারীরা কোনভাবেই নিরাপদ নয়। নারীকে মানুষ হিসাবে গণ্য না করার দৃষ্টিভঙ্গী ও আচরণ এবং সেই সাথে দেশে আইনের শাসন না থাকা ও বিচারহীনতার সংস্কৃতি যুক্ত হয়ে নারীর উপর ক্রমবর্ধমান অবিরাম ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের বর্তমান অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।

ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চিকিৎসা সেবার প্রয়োজনে দেশে মাত্র ২২টি কোম্পানিকে অনুমতি দেয়া হয়েছে বিভিন্ন ব্রান্ড- এর কিছু যৌন উত্তেজক ওষুধ তৈরির কিন্তু বর্তমানে প্রায় একশ’টি কোম্পানি এই ধরনের ওষুধ তৈরি ও বাজারজাত করছে। দেশের ফার্মেসীগুলোতে তা চিকিৎসকের পরামর্শপত্র ছাড়াই তা অবাধে বিক্রি হচ্ছে। এটাও ধর্ষণ ও যৌন নির্যাতনের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখছে কি না তা খতিয়ে দেখা দরকার।

অত্যন্ত দুঃখজনক যে, এইসকল সমস্যা নিরসনে নারীপক্ষসহ দেশের অন্যান্য নারীসংগঠন এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও নাগরিক সমাজ বার বার সরকার ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও তাদের কোন কার্যকর পদক্ষেপ এখন পর্যন্ত পরিলক্ষিত হচ্ছে না!

নারীপক্ষ’র দাবি, এইসকল বিষয়ে সরকার কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে কি না তা অবিলম্বে জনসমক্ষে প্রকাশ করা হোক।

তামান্না খান
আন্দোলন সম্পাদক
নারীপক্ষ।

Pin It on Pinterest

Share This