Select Page
২০২০-১১-২৫
‘নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ দিবস’- ২০২০

‘নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ দিবস’ উপলক্ষে বুধবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪২৭/২৫ নভেম্বর ২০২০, সন্ধ্যা ৭ টায় ‘প্রজন্মান্তরে নারীবাদী মৈত্রী’র আয়োজনে ‘মুক্তির মিছিল’ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলে মশাল ও বিভিন্ন প্ল্রাকার্ড বহন করা হয় এবং ‘তুই ধর্ষক’ ঝটিকা প্রতিবাদ করা হয়। মিক্তির মিছিল নারীপক্ষ কার্যালয়ের সামন থেকে শুরু হয়ে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। লিফলেট বিতরণ এবং মানিজ মিঞা এভিনিউতে (জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে) ঘোষণাপত্র পাঠ করা হয়।

ধর্ষণের বিরুদ্ধে ক্রোধ

যোগ দিন বিক্ষোভে

বিশ^ব্যাপী কোভিড-১৯ অতিমারীর বিধ্বংসী প্রভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতি, জনস্বাস্থ্য ও সামাজিক যোগাযোগ বিপর্যস্ত। এরই সাথে বেড়ে চলেছে ঘরে-বাইরে নারীর উপর সহিংসতা। কোভিড-১৯ সংক্রমণের শুরু থেকে পুলিশসহ দেশের প্রায় প্রত্যেকটা বাহিনীর সদস্যরা দৃশ্যমান থাকলেও নারীর উপর সহিংসতার ধরন ও মাত্রা বেড়েই চলেছে।

আইন ও সালিশ কেন্দ্র’র তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারী থেকে অক্টোবর ২০২০ এর মধ্যে পুরুষরা ১৩৪৯ জন নারীকে ধর্ষণ, ৪৬ জন নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা এবং ২৭১ জন নারীকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করেছে। ধর্ষণের শিকার হওয়ার কারণে ১২ জন নারী আত্মহত্যা করেছে।

নারীর শরীরের উপর সহিংসতা এবং এর বিচার না পাওয়া আমাদের ক্রোধোন্মত্ত করেছে। সরকার (বিশেষভাবে পুলিশবাহিনী), বিচারবিভাগ, আইনসভা, আমাদের অভিভাবক, আমাদের বাবা-মা এবং আমাদের শিক্ষকদেরকে আমরা বলতে চাই, এই সহিংসতার জন্য আপনারা সবাই দায়ী।

গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম দেশব্যপী ভয়াবহ ধর্ষণের ঘটনার ব্যাপক প্রচারে সয়লাব। আমরা জানি এটা নতুন কিছু নয়। নারীর উপর যৌন সহিংসতা সর্বদাই ছিল, তবে এইসকল ঘটনায় নৃশংসতা এবং ক্ষমতাসীনদের সম্পৃক্ততা পূর্বের অভিজ্ঞতা অতিক্রম করেছে।

আমরা লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়াই করা আন্তঃপ্রজন্ম নারীবাদী মানুষের একটি মৈত্রী। সমাজের গভীরে প্রথিত নারীকে মানুষ হিসেবে সম্মান ও মর্যাদা না দেয়ার মানসিকতা ও চর্চার বিরুদ্ধে সকল প্রজন্মের লড়াইয়ের প্রয়োজনে আমরা একত্রিত হয়েছি। এই প্রতিবাদ একটি স্বতন্ত্র উদ্যোগ। শ্রেণি, পেশা, বয়স বা সাংগঠনিক ও ব্যক্তি পরিচয় নির্বিশেষে, আমরা আমাদের ক্রোধ, দুঃখ এবং বেদনা নিয়ে সংগঠিত হয়েছি।

আমরা শুধূমাত্র পুরুষদ্বারা নারীর উপর সহিংসতার প্রতিবাদ করছি না; আমরা ঐ সংস্কৃতি ও চর্চারও প্রতিবাদ করছি, যা এই সহিংসতার জন্ম দেয়, লালন করে এবং এর প্রসার ঘটায়। সহিংসতার বিচার ও শাস্তির দাবি ছাড়াও আমরা নারীর প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গী পরিবর্তনের লক্ষ্যে বিষয়টি দীর্ঘমেয়াদী জন-আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত করার জন্য সংগঠিত হওয়ার প্রয়োজনীয়তা বোধ করছি। ‘নারীর শরীর তার এবং তার পরিবারের সম্মান/সম্ভ্রম ধারণ করে’ আমরা এই প্রচলিত ধ্যান-ধারণার প্রতিবাদ করছি। ‘নারীর দেহে পুরুষের সর্বময় অধিকার’ -এমন স্বত্বের বিরুদ্ধে আমরা লড়ছি। অপরাধীকে রেহাই ও নিরাপত্তা দেয়া, অপরাধীকে শাস্তি দেয়ার পরিবর্তে ভুক্তভোগীকে দোষারোপ করা, নির্যাতনকারীকে বিচারের মুখোমুখি না করে নারীকে তার আচরণ বদলাতে বাধ্য করার জন্য আমরা আমাদের পরিবার, আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং আমাদের সরকার -এর উপর ক্ষুব্ধ।

বাংলাদেশে লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতার ব্যাপক বিস্তৃতির একটি প্রধান কারণ হলো, এই সহিংসতাকে আমাদের সংস্কৃতির একটি স্বাভাবিক অংশ হিসেবে গণ্য করার মানসিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গী। আমরা বলতে চাই যে, লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা কখনই কোন ভাবেই কোন সংস্কৃতির অঙ্গ হিসেবে বিবেচনা করা যায় না।

সহিংসতামুক্ত বাংলাদেশ নিশ্চিত করতে আমাদের সম্মিলিতভাবে লড়াই করতে হবে এবং সেই লড়াই এখনই করতে হবে।

দেশের প্রত্যেকের কাছে আহ্বান, আমাদের এই লড়াইয়ে যোগ দিন এবং আপনার চারপাশের সবাইকে যোগ দিতে উদ্বুদ্ধ করুন। আপনার মা, বাবা, ভাই, বোন, আত্মীয়, প্রতিবেশী, বন্ধু, সহকর্মী, সহপাঠীকে এই লড়াইয়ে যুক্ত করুন। ঘরে ঘরে এ বিষয়ে আলোচনা শুরু করুন এবং ঘরের বাইরে সর্বত্র এই আলোচনা ছড়িয়ে দিন। আসুন, আমরা একে অপরকে শক্তি দিই।

আমরা ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ডের দাবি এবং মৃত্যুদন্ডের বিধান রেখে যে আইনটি পাশ করা হলো তা সমর্থন করি না। ধর্ষণ প্রতিরোধ বা হ্রাসের সাথে শাস্তির কঠোরতার কোন সম্পর্ক নেই। তাছাড়া মৃত্যুদন্ড মৌলিক মানবাধিকার পরিপন্থি।

“প্রজন্মান্তরে নারীবাদী মৈত্রী”
প্রকাশকাল: ১০ অগ্রহায়ণ ১৪২৭/২৫ নভেম্বর ২০২০

 

ঘোষণাপত্র
মুক্তির মিছিল
নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ দিবস
প্রজন্মান্তরে নারীবাদী মৈত্রী
৯ অগ্রহায়ণ ১৪২৭/২৫ নভেম্বর ২০২০


গত মাসে, অর্থাৎ অক্টোবর ২০২০ আমরা দেশজুড়ে ধর্ষণ বিরোধী প্রতিবাদের উত্তাল ঢেউ বয়ে যেতে দেখেছি। ভয়াবহ ও নৃশংস ধর্ষণের খবরে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল। ক্রোধে সাধারণ মানুষ নারীর সুরক্ষা ও নিরাপত্তার দাবী নিয়ে রাস্তায় নেমেছিল। আইন ও সালিশ কেন্দ্রের তথ্য অনুযায়ী জানুয়ারী থেকে অক্টোবর ২০২০ পর্যন্ত পুরুষরা ১৩৪৯ জন নারীকে ধর্ষণ, ৪৩ জন নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা এবং ২৭১ জন নারীকে ধর্ষণ করার চেষ্টা করেছে। ধর্ষণের শিকার হওয়ার কারণে ১২ জন নারী আত্মহত্যা করেছেন।


এই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে আজ আমরা নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ দিবস পালন করছি। ১৯৬০ সালের ২৫ নভেম্বর ডমিনিকান রিপাবলিকে একটি জনদরদী তৃণমূল সংগঠনে কর্মরত তিন বোনকে অপহরণ, অত্যাচার, ধর্ষণ ও হত্যা করা হয়। পাট্রিয়া মিরাবাল, মিনারভা মিরাবাল ও মারিয়া তেরেসা মিরাবাল ডমিনিকান রিপাবলিকের স্বৈরশাসক রাফায়েল ট্রুহিলো বিরোধী রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। মিরাবাল ভগিনীত্রয় কে স্মরণ করে ১৯৮১ সালে কলম্বিয়ার রাজধানী বোগোটায় অনুষ্ঠিত লাটিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয় নারীদের প্রথম সম্মেলনে এই দিনটিকে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ দিবস ঘোষণা করা হয়। ২০০০ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ এই দিনটিকে নারী নির্যাতন নির্মূলে আন্তর্জাতিক দিবস ঘোষণা করে।


আমরা আমাদের নারী ও মেয়েদের রক্ষার নামে তাদেরকে পিছে টেনে ধরি, ঘরে আবদ্ধ করি, তাদের স্বাভাবিক জীবন যাপনকে ব্যাহত করি। আমরা বিশ^াস করি এভাবেই আমরা তাদের বাইরের জগতের সম্ভাব্য ঝুঁকি থেকে রক্ষা করছি। বাড়ীতে থাকলেই বুঝি বাইরের হিং¯্রতা তাদের স্পর্শ করবে না। কিন্তু আমরা তাদেরকে কাদের হাত থেকে রক্ষা করছি? আমরা জানি যে, আমাদের জীবনে সহিংস পুরুষরা কোন অপরিচিত বা রহস্যময় লোক নয় – তারা আমাদেরই পরিবারের সদস্য, বন্ধু, আত্মীয়, প্রতিবেশী, শিক্ষক, সহপাঠী, সহকর্মী। নারীরা-মেয়েরা রাস্তার চেয়ে বাড়িতে বেশী নিরাপদ নয়; তারা ঘরে এবং বাইরে সমান ভাবেই নিগৃহীত। তাদেরকে এই ভাবে রক্ষা করতে গিয়ে ফলাফল কি হলো? তারা কি সহিংসতামুক্ত জীবনযাপন করতে পারে? আমরা কি পেরেছি তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে?


আমরা কিভাবে নারীদের রক্ষা করতে চেয়েছি? আমরা রক্ষার নামে ছোট মেয়েদের মাঝবয়সী লোকেদের সাথে বিয়ে দিয়ে দেই, একবারও মেয়েটির শারীরিক -মানসিক আঘাত এবং যন্ত্রণার কথা চিন্তা করি না। ২৫ অক্টোবর ১৪ বছরের একটি বালিকা বধু তার বিয়ের এক মাসের মধ্যেই যোনিপথে রক্তক্ষরণে মারা যায়। বাল্যবিবাহ প্রচলিত প্রথা ও আইন দ্বারা সমর্থিত একটি নিষ্ঠুরতম সহিংসতা। এব্যাপারে বিশ্বে বাংলাদেশের স্থান তৃতীয়, তবে বালিকা বধু সংখ্যার দিক থেকে বাংলাদেশ দ্বিতীয় স্থানে। এটা কোন ধরনের সুরক্ষা?


জাতীয় পরিসংখ্যানে দেখা যায় যে প্রতি ৩ জনে ২ জন নারী স¦ামী দ্বারা কোনো না কোনো সহিংসতার শিকার হন। তারপরও আমরা ঘরে থাকাকেই নিরাপদ মনে করি এবং নারীদের ঘরে থাকতে বলি। অথচ পরিবারের তথাকথিত সম্মান রক্ষার্থে আমরা সহিংসতার শিকার নারীকে চুপ থাকতে বলি, মামলা দায়ের করা থেকে বিরত রাখি। নিজ ঘর ও বাড়ি যদি নির্যাতনের আখড়া হয় তবে নারীরা কিভাবে সুরক্ষা পাবে? তাদের রক্ষা করার জন্য তাদের চলন বলন, পোশাক পরিচ্ছদের উপর হস্তক্ষেপ করি। কিন্তু তার পরও যখন বয়স, ধর্ম, বর্ণ, জাতি-গোষ্ঠি ভেদে নারীরা সহিংসতার শিকার হয় তখন যেই সংস্কৃতি ও সমাজ এই সহিংসতার জন্মদেয় ও লালন করে তার বিরুদ্ধে তৎপর না হয়ে, যে ধর্ষক তার দিকে আঙুল না তুলে বরং সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত নারীর ত্রুটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করি, তাকেই দোষারোপ করি। সুরক্ষার নামে নারীদের নতজানু, নিশ্চুপ এবং অদৃশ্য থাকার উপদেশ দেই, বাধ্য করি।
বৈবাহিক সম্পর্কে ধর্ষণ কে অপরাধ গণ্য করার দাবীর প্রতি সরকারের ভ্রূক্ষেপ পর্যন্ত নেই। সম্প্রতি সর্বোচ্চ আদালত ধর্ষণ আইন সংস্কার কোয়ালিশনের দায়ের করা এক আবেদনে সরকারকে নোটিশ জারী করেছে কেন বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে ধর্ষণকে অপরাধ গণ্য করা হবে না ? এখন আমরা সরকারের উত্তরের অপেক্ষায়।

দেশে নারীর উপর সহিংসতা রোধে ১৭ই নভেম্বর সংসদে ধর্ষণের শাস্তি মৃত্যুদন্ডের বিধান যুক্ত করে আইন সংশোধন করা হয়েছে। ঐ একই সংসদে আইনসভার একজন সদস্য ধর্ষণের জন্য নারীবাদীদের এবং নারীদের পোষাক কে দায়ী করেছেন! উনার মন্তব্যে সংসদ কক্ষে উপস্থিত একজনও আপত্তি জানান নাই! এই ঘটনা আমাদের ক্ষুব্ধ করেছে, হতাশ করেছে।

আমরা মৃত্যুদন্ডের বিরোধিতা করি। ধর্ষণসহ কোন অপরাধ দমনে এর কোন প্রভাব নাই! আইন করে মৃত্যুদন্ডের বিধান করার পর এক অক্টোবর মাসেই ধর্ষণ ও ধর্ষণের চেষ্টার আরও ৪৪১ টি খবর পাওয়া গেছে। মৃত্যুদন্ডের বিধান তাৎক্ষনিক জনরোষ মেটাতে ভূমিকা রাখে মাত্র!!

এমন সুরক্ষা আমরা চাই না! সুরক্ষার নামে আমাদের প্রতি বৈষম্য করা, আমাদেরকে ত্যাগ স্বীকার করতে বলা ও সহিংসতা এড়ানোর দায় আমাদের উপরই বর্তানো হয়। সুরক্ষার নামে কোন প্রকার প্রতিবন্ধকতা আমাদের উপর চাপানো চলবে না! আমরা আমাদের অধিকারের সম্পূর্ন ও নিঃশর্ত প্রয়োগ চাই; আইন সংস্কার করে নারী-পুরুষের সম অধিকার ও সম মর্যাদা প্রতিষ্ঠাই আমাদের জন্য একমাত্র সুরক্ষা। আমরা ভয় ভীতি ও নির্যাতন থেকে মুক্তি চাই! চাই মানুষ হিসাবে বাঁচার সম্পূর্ন মর্যাদা ও অধিকার!!
আমরা প্রজন্মান্তরে নারীবাদী মৈত্রী লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতার বিরুদ্ধে লড়াই করা ব্যক্তিদের একটি জোট। নারীর অধস্তনতা সম্পর্কে গভীরে প্রোথিত বদ্ধমূল সব ধারণার সমূলে উৎপাটন চাই। এই পশ্চাদপদতা ও কুপমন্ডুকতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রয়োজনে আমরা একত্র হয়েছি। ২৫ শে নভেম্বর নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক প্রতিবাদ দিবসে “মুক্তির মিছিল” নিয়ে রাস্তায় নেমেছি। আমরা আমাদের মুক্তির জন্য মিছিল করছি, ঝটিকা প্রতিবাদ করছি।

আমাদের প্রতিবাদে সামিল হউন। আমরা আমাদের ক্রোধ দেখাবো, শুনাবো ও বুঝাবো। আমরা রাস্তা ঘাটে বিনা বাধায় চলার অধিকার প্রতিষ্ঠা করবো। আমরা রাজপথ দখল নিব, তা হোক দিন কিংবা রাত!

Pin It on Pinterest

Share This