স্মারককনং- না.প- ০৫/২০২১ – ২৫৬
২৬ বৈশাখ ১৪২৮/৯ মে ২০২১
প্রতিবাদ বিবৃতি
নির্যাতন, নিপীড়ন বা সহিংসতার শিকার নারীকে দোষারোপের সংস্কৃতির অবসান দাবী
গত ২৬ এপ্রিল ২০২১ ঢাকার গুলশান এলাকার একটি বাসা থেকে কলেজ ছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় মুনিয়ার বড় বোন দেশের অন্যতম শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরকে আসামী করে তার বিরুদ্ধে মুনিয়াকে ‘আত্মহত্যার প্ররোচনার’ অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করেছেন । অন্যান্য ঘটনার মতো গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রায় প্রতিদিনই মেয়েটির চরিত্র বিশ্লেষণ করে অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ কোন না কোন লেখা বা বক্তব্য দেয়া হচ্ছে, যা আসল অপরাধ ও অপরাধীকে আড়াল করছে। নারীপক্ষ এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে। নারীর উপর সহিংসতা/ধর্ষণ/যৌননির্যাতন/আত্মহত্যার প্ররোচনা/হত্যার ঘটনায় নারীকে দোষারোপ করা আমাদের সমাজের একটি ব্যাধি এবং আমাদের গণমাধ্যমগুলো এটাকেই ব্যাপকভাবে প্রচার ও প্রকাশ করছে! গণমাধ্যমকে বলা হয় সমাজের বিবেক। অথচ অধিকাংশ সংবাদ মাধ্যম ও সাংবাদিকগণ সমাজের এই সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনে কোন ভূমিকা না রেখে, বরং তা লালন ও বিস্তারই করছে। দেশের প্রচলিত আইনেও বিচার চাইতে গেলে নারীকেই বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হতে হয়। সেখানেও চরিত্র বিশ্লেষণ করে তাকেই দোষারোপ করা বা তার উপরই দায় চাপানোর চেষ্টা করা হয়। ভুক্তভোগী নারীকে দোষারোপ বা গাল-মন্দ করে আসল অপরাধীকে তার কৃত অপরাধ থেকে রেহাই দেয়ার একটি হীনচেষ্টা চলে । নারীপক্ষ এই সংস্কৃতি ও চর্চার অবসান দাবী করছে।
নারীপক্ষ’র দাবী অপরাধের বিচারকে প্রাধান্য না দিয়ে নারীকে দোষারোপের এই অপসংস্কৃতি বন্ধ করতে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে সকল প্রচার মাধ্যমের মালিকপক্ষ ও কর্মীগণ/সাংবাদিকদেরকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার জন্য দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হোক।
নারীপক্ষ মনে করে, শুধুমাত্র শাস্তি দিয়ে অপরাধ দমন করা যাবে না। নারীকে পূর্ন মানুষ হিসাবে মর্যাদা ও সম্মান তৈরীতে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির জন্য কার্যকর শিক্ষা কারিকুলাম প্রণয়নসহ গণমাধ্যম ও প্রচার মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার প্রচারনা চালাতে হবে। নারীপক্ষ এই বিষয়ে সরকারের সকল মহলের প্রতি গভীর দৃষ্টি আর্কষন করছে।
তামান্না খান
আন্দোলন সম্পাদক
নারীপক্ষ।