স্মারক নং না.প ০৯/২০২২- ৩০২
৫ আশ্বিন ১৪২৯/২০ সেপ্টেম্বর ২০২২
অসংখ্য প্রতিকূলতা আর বাধার পাহাড় পেরিয়ে ছিনিয়ে আনা জয়ে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলকে নারীপক্ষ’র প্রাণঢালা অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা
বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের একের পর এক বিজয় এবং গতকাল সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে স্বাগতিক নেপালকে হারিয়ে দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট ছিনিয়ে আনায় নারীপক্ষ অত্যন্ত আনন্দিত ও গর্বিত। বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের প্রতিটি সদস্য, কোচ, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) এবং সংশ্লিষ্ট প্রত্যেককে নারীপক্ষ থেকে জানাচ্ছি প্রাণঢালা অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা ।
বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটে মেয়েদের ফুটবল খেলাটা কখনোই সহজ ছিল না। সমাজের নানা বাধা-বিপত্তি, টিপ্পনী, এমনকি একটি গোষ্ঠীর সহিংস হামলাসহ নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে, অনেক নেতিবাচক সমালোচনা সহ্য করে ফুটবল মাঠে এসেছেন বাংলার এই মেয়েরা। সারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা এই মেয়েদের কাছে ফুটবল দারিদ্র্য পীড়িত জীবন থেকে মুক্তির এক আশ্বাস, কারণ তাঁদের অনেকে এসেছেন বাবাকে হারিয়ে বা মায়ের শেষ সম্বলটুকু সাথে নিয়ে অথবা বোনের অলঙ্কার বিক্রি করে।তাঁদের কেউ বা আবার পরিবারের একমাত্র আয়ের অবলম্বন হয়ে এসেছেন। বোধকরি সেখান থেকেই তাঁদের মধ্যে সাফল্যের তীব্র আকাক্সক্ষা ও দুর্দমনীয় আত্মবশ্বাসটা পাওয়া।
আমাদের নারী ফুটবল দলের এই বিজয়ে আমরা একদিকে যেমন আনন্দিত ও গর্বিত অপরদিকে তেমন ক্ষুব্ধ, লজ্জিত ও বেদনার্ত এটা জেনে যে, এখনো, এই যুগে দাঁড়িয়েও একজন নারী ফুটবলার ও পুরুষ ফুটবলারের পারিশ্রমিকের মধ্যে রয়েছে নির্লজ্জ বৈষম্য! ‘এ’ গ্রেডের একজন শীর্ষ পুরুষ ফুটবলারের বছরের পারিশ্রমিক যেখানে ৫০ – ৬০ লাখ টাকা, সেখানে একই স্তরের একজন নারী ফুটবলার পান মাত্র ৩ – ৪ লাখ টাকা।ক্লাব ফুটবলে একজন শীর্ষ নারী ফুটবলারের পারিশ্রমিকের পরিমানও খুবই কম। ‘এ’ গ্রেডের একজন নারী ফুটবলারের মাসিক পারিশ্রমিক মাত্র ১০ হাজার টাকা, ‘বি’ গ্রেডের ৮ হাজার টাকা এবং ‘সি’ গ্রেডের ৬ হাজার টাকা।
নারীপক্ষ নারী ফুটবলার ও পুরুষ ফুটবলারের পারিশ্রমিকের মধ্যে সমতা আনয়ন এবং নারী ফুটবলারদের মাসিক বেতন হার উন্নয়নে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন এবং ক্রিড়া মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছে।
তামান্না খান পপি
আন্দোলন সম্পাদক, নারীপক্ষ।