Select Page
২০০৭-০৩-০৮
আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০০৭

ধর্ম নিয়ে রাজনীতি চলবে না

আজ ৮ মার্চ, আন্তর্জাতিক নারী দিবস। নারী অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ৮ মার্চ-এর অবদান অপরিসীম। সারা বিশ্বে নারীসমাজের জন্য এই দিনটি অধিকার প্রতিষ্ঠার মাইলফলক। ১৮৫৭ সালের ৮ মার্চ নিউইয়র্ক শহরের সেলাই কারখানার নারী শ্রমিকদের অমানবিক ও বিপজ্জনক কর্মপরিবেশ, দৈনিক বারো ঘন্টা কাজ ও স্বল্প মজুরির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং পরবর্তী সময়ে বিভিন্নমুখী নারী অধিকার আন্দোলনের ধারাবাহিকতাকে কেন্দ্র করে ১৯১০ সালে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিন ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো এ দেশেও পালিত হয় এই দিবসটি। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯১ সাল থেকে প্রতি বছর বাংলাদেশে ৪৮টি মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদ্যাপন কমিটি একটি নির্দিষ্ট বিষয়কে কেন্দ্র করে ব্যাপকভাবে দিবসটি পালন করে আসছে। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় – ”ধর্ম নিয়ে রাজনীতি চলবে না”

ধর্ম নিয়ে রাজনীতি আমাদের স্বাধীনতা চেতনার পরিপন্থি, সামাজিক মননশীলতা ও মুক্তবুদ্ধি চর্চার পরিপন্থি এবং নারী স্বাধীনতা ও অধিকার পরিপন্থি। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকল সম্প্রদায়ের মানুষ অংশগ্রহণ করেছে, হারিয়েছে আপনজন। আর এ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত স্বাধীন বাংলাদেশের সাংবিধানিক মূলনীতির একটি ছিল ধর্ম নিরপেক্ষতা।

সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় মূলনীতি থেকে ধর্ম নিরপেক্ষতা বাদ দেয়া হয় এবং ইসলামকে রাষ্ট্র ধর্ম হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়। সকল বিরোধিতা, প্রতিবাদ, প্রতিরোধকে উপেক্ষা করে রাজনৈতিক দলগুলো ধর্ম নিয়ে রাজনীতির খেলায় মত্ত হয়। ধর্মের অজুহাতে রাজনৈতিক দলগুলো নারীকে সম অধিকার থেকে বঞ্চিত করে চলেছে। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে এবং নির্বাচনী কৌশল হিসেবে ফতোয়াবাজ এবং ধর্মান্ধ রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে জোটবদ্ধ হওয়া এবং চুক্তি সনদের ঘটনাও ঘটেছে। সুদীর্ঘ রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগ্রামের মাধ্যমে যে স্বাধীন বাংলাদেশ আমরা পেয়েছিলাম তাকেই আজ রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যক্রম প্রশ্নবোধক করে তুলছে।

রাজনৈতিক দলগুলোর এহেন ধর্ম ব্যবহার যেন জ্ঞান ও সংস্কৃতি চর্চা এবং জীবন-জীবিকার সংগ্রামে লিপ্ত নারীর ক্রমবর্ধমান বিচরন স্থলকে আবারো সংকুচিত করতে না পারে, সে জন্য প্রয়োজন সচেতন সংগঠিত সামাজিক সাংস্কৃতিক আন্দোলন ও আইন সংস্কার।
রাষ্ট্রের কোনো ধর্ম থাকতে পারে না, ধর্ম মানুষের। তাই রাষ্ট্রকে হতে হবে ধর্ম নিরপেক্ষ।
আজকে আবার দাবি জানাচ্ছি – রাষ্ট্রকে ধর্ম নিরপেক্ষ হিসেবে ঘোষণা দেয়া।

আমাদের দাবি
• বাংলাদেশকে ধর্ম নিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য সংবিধানের সংশ্লিষ্ট সংশোধনী বাতিল করা।
• বিভিন্ন ধর্ম ও প্রথা ভিত্তিক পারিবারিক আইন বাতিল করে সকল নাগরিকের জন্য নারী পুরুষের মধ্যে সমতা ভিত্তিক সর্বজনীন আইন প্রনয়ন করা।

আমাদের করণীয়
• সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে এবং প্রতিষ্ঠানে ধর্ম নিরপেক্ষ সংস্কৃতি চর্চার মাধ্যমে সকল নাগরিকের সমমর্যাদা নিশ্চিত করা।

আমাদের আহবান
জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে যে মূল্যবোধের প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ হয়েছিল, সর্বক্ষেত্রে সেই মূল্যবোধের চর্চা করুন।

_____________________________________________________________________________________________

অনুষ্ঠান সূচি
বৃহস্পতিবার, ২৪ ফাল্গুন ১৪১৩/ ৮ মার্চ ২০০৭
জমায়েত: ৮.৩০ মি:, মানিক মিয়া এভিনিউ, র‌্যালি ৯.০০ টায় , সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান: ১০.০০ টা থেকে ১১.০০ টা, কলাবাগান ক্রীড়াচক্র খেলার মাঠ।

নারী সংগঠনসমূহের সমন্বয়ে গঠিত দুর্বার নেটওয়ার্ক
সচিবালয়ঃ নারীপক্ষ, নীলু স্কোয়ার (৫ম তলা), সড়ক-৫/এ, প্লট – ১,৩,৫, সাতমসজিদ রোড, ধানমন্ডি, ঢাকা – ১২০৯
———————————————————————————

নারীপক্ষ
 র‌্যাংগস নীলু স্কোয়ার (৫ম তলা), সড়ক- ৫/এ, বাড়ী- ৭৫, সাতমসজিদ রোড, ধানমন্ডি, ঢাকা-১২০৯, বাংলাদেশ।
জিপিও বক্স-৭২৩, ঢাকা-১০০০, ফোন : ৮৮০-২-৮১১৯৯১৭, ৮১৫৩৯৬৭, ফ্যাক্স : ৮৮০-২-৮১১৬১৪৮
ই-মেইল : naripokkho@gmail.com, ওয়েব : www.naripokkho.org.bd

Pin It on Pinterest

Share This