Select Page
২০০৩-০৩-০৮
আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০০৩

‘নিরাপত্তা – নারীর অধিকার’

৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। আমরা ঐতিহাসিকভাবে এই দিনটিকে যুক্ত করে থাকি বিশ্বব্যাপী নারী অধিকার আন্দোলনের বিভিন্ন সংগ্রামী অধ্যায়ের সাথে। ১৮৫৭ সালে ৮ মার্চ যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরে সেলাই কারখানার নারী শ্রমিকরা বিপদজনক ও অমানবিক কর্ম পরিবেশ, স্বল্প মজুরী ও দৈনিক ১২ ঘন্টা শ্রমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিল বের করে। তাদের সেই শামিত্মপূর্ণ মিছিলের উপর পুলিশ হামলা চালায়। তিন বছর পর ১৮৬০ সালের ৮ মার্চ নারী শ্রমিকরা সংঘবদ্ধ হয়ে তাদের দাবী আদায়ের লক্ষ্যে নিজস্ব ইউনিয়ন গঠনে সমর্থ হয়।

এই সকল ঘটনা ধারার সম্মিলনের মধ্য দিয়েই নারীদের বিভিন্ন মুখী প্রতিবাদী ভূমিকার প্রতি আন্তর্জাতিক সংহতি প্রকাশ, সমর্থন দান ও সহযোগিতার ক্ষেত্র তৈরীর প্রতীক হিসাবে একটি দিনকে চিহ্নিত করার উপলব্ধি জাগে। অতঃপর ১৯১০ সালে কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক নারী সম্মেলনে জার্মান সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের নেত্রী ক্লারা জেট্কিনের প্রমত্মাব অনুসারে ঐতিহাসিক ভাবে ৮ মার্চকে বিশ্ব নারী দিবস ঘোষণা করা হয়।

নারী আন্দোলনের এই প্রতিবাদী ধারাকে তুলে ধরে বাংলাদেশে এই দিনটি পালনের লক্ষ্যে ১৯৯১ সালে বিভিন্ন সংগঠনের সমন্বয়ে ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদ্যাপন কমিটি’ গঠিত হয়। বিগত ১৩ বছর ধরে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদ্যাপনের মাধ্যমে নারী আন্দোলনের বিভিন্ন দাবী তুলে ধরা হয়। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘নিরাপত্তা – নারীর অধিকার’।

নারী সারাবিশ্বে সামাজিক ঐক্যের ধারক। সমাজের স্থিতাবস্থা বজায় রেখে তৈরী করে প্রজন্মের পর প্রজন্ম

সকল নাগরিকের নিরাপত্তা দেয়া রাষ্ট্রের কর্তব্য। নারীর প্রতি সহিংসতা আজ রাষ্ট্রীয় সামাজিক ও পারিবারিক পযায়ে ক্রমবর্ধমান ঘটনায় পরিণত হয়েছে। শুধু সংখ্যাগত বৃদ্ধি নয়, মাত্রার দিক থেকেও নির্যাতনের প্রকার ও ধরনে পরিবর্তন ঘটছে, যা নারীর নিরাপত্তাহীনতাকে প্রকট করে তুলছে। লোকচক্ষু’র অমত্মরালেও বহু নারী নির্যাতনের শিকার হয়। অনেক নারীই তাদের পরিবার ও কর্মক্ষেত্রে চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে বসবাস করে। তারা ক্ষতিগ্রসত্ম হয় শারীরিক ও মানসিকভাবে ব্যবহত হয় তাদের সৃজমনশীলতা ও নিরাপত্তাহীনতার এই ভয়াবহতা থেকে শিশু কিংবা বৃদ্ধা কেউই মুক্ত নয়। নারী নিরাপদ নয় বাবার ঘরে, স্বামীর সংসারে, স্কুল-কলেজে, খেলার মধ্যে ও কর্মক্ষেত্রে। এই অবস্থার অবসার এখন সময়ের দাবী। নারী নিরাপত্তা চায় সবখানে। নারীর প্রতাশা নিরাপদ পরিবেশের।

যে কোন দুর্যোগ-অরাপকতায় নারীরা সবচেয়ে বেশী দুর্ভোগের শিকার হয়। আর যুদ্ধের কথাতো বলাই বাহুল্য। অতীতে বাংলাদেশসহ পৃথিবীর যে কোন জায়গায়ই যুদ্ধ পরিস্থিতিতে নারীর ওপর নেমে এসেছে চরম নির্যাতন নিপীড়ন-হত্যা-ধথর্ষণসহ সামাজিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তাহীনতা। তাই স্বাভাবিকভাবেই বর্তমানে ইরাকের ওপর মার্কিস হামলার নিরামহীন হুমকি ও জোর তৎপরতাসহ মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ পরিস্থিতি বিশ্বব্যাপী নারীদের নিরাপত্তার প্রতি এক ভয়াবহ হুমকির সৃষ্টি করেছে।

তাই আসুন আমরা আজ শুধু বাংলাদেশের নারী নয়, সারা বিশ্বের নারীদের নিরাপত্তার দাবী তুলি এবং বিশ্বের সকল মানুষের নিরাপত্তার জন্য সোচ্চার হই। নারী সমাজের দাবী সুস্থঞ ও সহিংসতা মুক্ত স্বাভাবিক জীবন। তাই ৮ই মার্চ আন্তর্জাতিক নারী বিবসে আমাদের অঙ্গীকার, নিরাপত্তা-নারীর অধিকার।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন কমিটি
নারীপক্ষ
 র‌্যাংগস নীলু স্কোয়ার (৫ম তলা), সড়ক- ৫/এ, বাড়ী- ৭৫, সাতমসজিদ রোড, ধানমন্ডি, ঢাকা-১২০৯, বাংলাদেশ।
জিপিও বক্স-৭২৩, ঢাকা-১০০০, ফোন : ৮৮০-২-৮১১৯৯১৭, ৮১৫৩৯৬৭, ফ্যাক্স : ৮৮০-২-৮১১৬১৪৮
ই-মেইল : naripokkho@gmail.com, ওয়েব : www.naripokkho.org.bd

Pin It on Pinterest

Share This