Select Page
২০২২-১১-০৫
পোশাক শিল্পে কর্মরত নারীর উপর সাহংসতা প্রতিরোধ

কোভিড-১৯ মহামারীর সময় তৈরি পোশাক শিল্পের সকল শ্রমিকদের যথাযথ স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য প্রস্তুতকৃত গাইডলাইনবিজিএমইএ) প্রতিনিধির কাছে হস্তান্তর

কোভিড -১৯ কালে পোশাক শিল্প শ্রমিকদের সুরক্ষাঃ “সজাগ”- ব্লাস্ট, ক্রিশ্চিয়ান এইড, নারীপক্ষ এবং এসএনভি সম্মিলিত ভাবে সেপ্টেম্বর ২০১৭ থেকে “পোশাক শিল্পে কর্মরত নারীর উপর সহিংসতা প্রতিরোধ” শীর্ষক একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে গ্লোবাল ফান্ড ফর উইমেন এর আর্থিক সহায়তায়।

করোনার সংক্রমণ থেকে পোশাক শিল্পের শ্রমিকদের সুরক্ষিত রাখার লক্ষ্যে সজাগ কোয়ালিশন এবং স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইন্সটিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে কেবল পোশাক শিল্প কারখানাকে কেন্দ্র করে “ Ensuring Healthy Environment for Workers’ Safety amid Covid-19: A Guideline for RMG Sector “ শীর্ষক একটি গাইডলাইন তৈরি করেছে। উল্লেখ্য, এই গাইডলাইনটি কারখানার মালিক,ব্যবস্থাপক, চিকিৎসক, এবং শ্রমিক, আন্তর্জাতিক ক্রেতা, অর্থনীতিবিদ, স্বাস্থ্য অর্থনীতিবিদ, সমাজবিজ্ঞানী, জেন্ডার বিশেষজ্ঞ, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, ভাইরাস বিশেষজ্ঞ, ঔষধ বিশেষজ্ঞ সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যক্তিবর্গের পরামর্শের ভিত্তিতে এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, বিজিএমইএ, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা, বেটার ওয়ার্ক বাংলাদেশ এর গাইডলাইন সমূহ পর্যালোচনা করে তৈরি করা হয়েছে।

উক্ত গাইডলাইনটি গত ২৭ আগষ্ট ২০২০ বাংলাদেশ পোশাকপ্রস্তুত কারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক, জনাব নজরুল ইসলাম এর কাছে হস্তান্তর করেন মাহীন সুলতান, টিম লিডার, সজাগ কোয়ালিশন নারীপক্ষ। অনুষ্ঠানে বিজিএমইএ এর প্রতিনিধি এবং সজাগ কোয়ালিশনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

“পোশাক শিল্পে কর্মরত নারীর উপর সহিংসতা প্রতিরোধে সজাগ এর অভিজ্ঞতাঃ অর্জন ও সম্ভাবনা” বিষয়ক ওয়েবিনার ২০২০।

২৭ জুলাই ২০২০/ ১২ শ্রাবণ ১৪২৭ ‘সজাগ’ কোয়ালিশন এর আয়োজনে বিকাল ৩:৩০ মিনিটে “পোশাক শিল্পে কর্মরত নারীর উপর সহিংসতা প্রতিরোধে সজাগ এর অভিজ্ঞতাঃ অর্জন ও সম্ভাবনা বিষয়ক ওয়েবিনার” অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত ওয়েবিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব ড. মো: রেজাউল হক, অতিরিক্ত সচিব, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়। পোশাক শিল্পে কর্মরত নারীর উপর সহিংসতা প্রতিরোধে কাজ করার অভিজ্ঞতা উপস্থাপন করেন কোয়ালিশন প্রতিনিধিগণ যথা রওশন আরা-প্রকল্প পরিচালক নারীপক্ষ, মো: তৈয়্যেবুর রহমান-প্রকল্প ব্যবস্থাপক- ব্লাস্ট, জামাল উদ্দীন-ইনক্লুসিভ বিজনেস এ্যাডভাইজার- এস এনভি ও সজাগসাথী কামরুন নাহার- কোয়ালিটি ইন্সপেক্টর- মিলেনিয়াম টেক্সটাইল (সাউদার্ন) লি:। প্রকল্প মূল্যায়ন প্রতিবেদনের সারাংশ উপস্থাপন করেন ফারহানা আফরোজ-হেড অব প্রোগাম ক্রিশ্চিয়ান এইড। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মাহীন সুলতান, দলনেতা সজাগ কোয়ালিশন এবং অনুষ্ঠানে সমাপনী বক্তব্য রাখেন পঙ্কজ কুমার, কান্ট্রি ডিরেক্টর- ক্রিশ্চিয়ান এইড ।

অনুষ্ঠানে আলোচক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, কামরুন নাহার-কোয়ালিটি ইন্সপেক্টর মিলেনিয়াম টেক্সটাইল (সাউদার্ন) লি:, প্রদ্বীপ কুমার নাথ-এজিএম কমপ্লায়েন্স, ইন্টারস্টফ এ্যাপারেলস লি:, ডা: আবুল হোসেন- প্রোগ্রাম ডিরেক্টর, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়, মনোয়ার হোসেন-সিনিয়র সেক্রেটারী, বিজিএমইএ।

কোয়ালিটি ইন্সপেক্টর (সজাগসাথী) কামরুন নাহার বলেন, নারীর উপর সহিংসতা ও যৌন হয়রানি রোধের প্রশিক্ষণ পেয়ে আমরা অন্য শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ করাতে পেরেছি, বিভিন্ন সমস্যা আসলে পরামর্শ দিতে পেরেছি। আমি মনে করি প্রশিক্ষণ পেয়ে আমরা যেমন কারখানার সমস্ত শ্রমিক ও স্টাফকে যৌন হয়রানি রোধ সচেতন করতে পেরেছি তেমনি দেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে এই ধরণের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করলে নারীর উপর যৌন হয়রানি অনেকটা কমে যাবে।

ইন্টারস্টফ এ্যাপারেলস লি: এর এজিএম কমপ্লায়েন্স প্রদ্বীপ কুমার নাথ বলেন, অভিযোগ কমিটি গঠনের একটি অত্যাবশ্যকীয় বিষয় হলো কারখানার বাইরের ২জন সদস্য থাকতে হবে। এই ক্ষেত্রে কারখানা কর্তৃপক্ষ দ্বিধাগ্রস্থ থাকে, আমরাও ছিলাম। কিন্তু সজাগের সাথে কাজ করতে গিয়ে আমাদের সেই দ্বিধা দুর হয়েছে। আমরা কমিটি গঠন করেছি। এর ফলে এই ইস্যূতে ছোটখাটো সমস্যা নিয়ে শ্রমিকেরা মুখ খুলছে, জানাচ্ছে যা কারখানার পরিবেশ ও কার্যক্রমকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে সহায়ক হচ্ছে।

আওয়াজ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক নাজমা আক্তার বলেন, যে সব কারখানায় অভিযোগ কমিটি গঠন হয়েছে সেগুলো নিয়মিত ফলোআপ ও মনিটরিং করতে হবে যেন তা সঠিকভাবে কাজ করে এবং স্থায়ী হয়। পোশাক শিল্পে এখনও অনেক কাজ করার আছে সেক্ষেত্রে এনজিও, মালিক, সরকার, বিজিএমইএ সবাইকে একসাথে কাজ করতে হবে।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের প্রেগ্রাম ডিরেক্টর, ড. আবুল হোসন – বলেন, অভিযোগ কমিটি গঠন ও সক্রিয় থাকার ক্ষেত্রে যে সব ভালো চর্চাগুলো আছে সেগুলো আমাদের সাথে শেয়ার করলে আমরা সারা দেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে কাজ করতে পারবো। তিনি ভালো চর্চাগুলো বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ে শেয়ার করা এবং এই কার্যক্রমকে পাইলট এর মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে মেইনস্ট্রিম করার জন্য লবিং করারও পরামর্শ দেন। এ ব্যাপারে তার দপ্তর সার্বিক সহায়তা করবে।

বিজিএমইএ- এর সিনিয়র সচিব মনোয়ার হোসেন বলেন, যৌন হয়রানির মতো ইস্যূতে অনেকেই কথা বলতে চায়না। বিজিএমইএ এই বিষয় নিয়ে কাজ করছে। কাজেই সজাগ কোয়ালিশন যদি এই ইস্যূ নিয়ে ভবিষ্যতে কাজ করতে চায় সে ক্ষেত্রে আমরা আপনাদের সহায়ক হতে চাই।

শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মো: রেজাউল হক বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে আপনাদের কাছে যেসব ফাইন্ডিংস ও সুপারিশমালা আছে সেগুলো আমাদের কাছে পাঠালে বিধিমালা সংশোধন ও আইন সংশোধনের সময় কাজে লাগবে। কর্মপরিবেশ উন্নয়নে বেসরকারী উদ্যোগ ও কার্যক্রমকে আমরা স্বাগত জানাই। সকলের সম্মিলিত প্রয়াসে আমাদের শিল্পের পরিবেশ উন্নত হবে, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাবে যার ফলে মালিক, শ্রমিক সহ সকল পক্ষ লাভবান হবে, শিল্প ও দেশ সমৃদ্ধ হবে।

সজাগ কোয়ালিশন আয়োজিত পোশাক শিল্প কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠান

২৯ মাঘ ১৪২৪/১১ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ সকাল ১০:০০মিনিটে সজাগ কোয়ালিশন (ব্র্যাক,ব্লাস্ট, ক্রিশ্চিয়ান এইড, নারীপক্ষ, এসএনভি) এর “পোশাক শিল্পে কর্মরত নারীর উপর সাহংসতা প্রতিরোধ” (Initiative to End Gender-Based Violence in the Garments Industry) প্রকল্পের আয়োজনে ৪টি পোশাক শিল্প কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর Hotel High Garden উত্তরায় অনুষ্ঠিত হয়। পোশাক শিল্প কারখানা কর্তৃপক্ষের সাথে সজাগ কোয়ালিশনের পক্ষ থেকে চুক্তি স্বাক্ষর করেন মাহীন সুলতান, টীম লিডার-সজাগ কোয়ালিশন, সদস্য নারীপক্ষ। অনুষ্ঠানে সজাগ কোয়ালিশনভুক্ত ৫টি সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

উক্ত অনুষ্ঠানে প্রকল্পের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন ফারথিবা রাহাত খান, টীম লিডার RMG কর্মসূচি SNV, রওশন আরা, প্রকল্প পরিচালক, মাহীন সুলতান, টীম লিডার ও সদস্য নারীপক্ষ এবং পোষাক শিল্প কারখানার পক্ষ থেকে
Hydroxide Knitwear Ltd, এর রিবন বেগম, সিনিয়র মানব সম্পদ অফিসার, Millennium Textile (Southern) Ltd. I Fashion House (Southern ) Ltd., এর আশরাফুল আহমেদ রঞ্জু ,চীফ অপারেটিং অফিসার এবং Annesha Style Ltd. এর মো: মহসীন হোসেন, সহকারী ব্যবস্থাপক বক্তব্য রাখেন। প্রকল্পটি নারীপক্ষ’এর নেতৃত্বে বাস্তবায়িত হচ্ছে। অর্থায়নে গ্লোবাল ফান্ড ফর উইমেন।

Pin It on Pinterest

Share This