বিশিষ্ট কবি নারী মুক্তি আন্দোলনকারী
১৯১১ খ্রিষ্টাব্দের ২০ জুন (সোমবার, ১০ আষাঢ় ১৩১৮ বঙ্গাব্দ), বেলা ৩টায়, বরিশালের শায়েস্তাবাদস্থ রাহাত মঞ্জিলে সুফিয়া খাতুন জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম বাবা সৈয়দ আবদুল বারীর এবং মায়ের নাম সৈয়দা সাবেরা খাতুন। ১৯১২ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর বাবা সাধকদের অনুসরণে নিরুদ্দেশ যাত্রা করেন। ফলে তাঁরে সাবেরা খাতুন অনেকটা বাধ্য হয়ে বাবার বাড়িতে এসে আশ্রয় নেন। এই কারণে তাঁর শৈশব কেটেছিল নানা-বাড়িতে।
তাঁর মাতৃকুল ছিল শায়েস্তাবাদের নবাব পরিবারেরৰ। এই পরিবারের কথ্য ভাষা ছিল উর্দূ। এই কারণে অন্দর মহলে মেয়েদের আরবি ফারসি শিক্ষার ব্যবস্থা থাকলেও বাংলা শেখানো হতো না। মূলত তিনি বাংলা শেখেন তাঁর মায়ের কাছে। তাঁর বড় মামার একটি সুপ্রশিদ্ধ বিরাট গ্রন্থাগার ছিল। মায়ের উৎসাহ ও সহায়তায় এ লাইব্রেরির বই পড়ার সুযোগ ঘটেছিল। মূলত শিশুতোষ বাংলা বই তিনি এই গ্রন্থাগার থেকে পড়েছিলেন।
সে সময় সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারগুলোতে মেয়েদের স্কুলে যাওয়ার কোনো রীতি ছিল না। শুধু একবার বায়না ধরে পায়জামা আচকান টুপি পড়ে ছেলের সাজে স্কুলে গিয়েছিলেন। বাস্তবে স্কুলে যাওয়া আর কোনদিন সম্ভব না হয় নি। কিন্তু বাড়িতে অন্যান্য মেয়েদের সাথে স্কুল-স্কুল খেলা খেলতেন। এই খেলায় তিনি ইংরেজিতেই কৃতিত্বের পরিচয় দিতেন বেশি। এই কারণেই ‘সন্দেশ’ পত্রিকার গ্রাহক হবার অপূর্ব সুযোগ লাভ করেছিলেন। সেকালের রক্ষণশীল সমাজের কোনো মেয়ের নামে পত্রিকা এসেছে, এটাও অপরাধ মনে করা হতো। এই সময় জুবিলী স্কুলের পন্ডিত প্যারীলাল বাবু (স্থানীয় পোস্ট অফিসে পোস্টমাস্টারের দায়িত্বে ছিলেন) নবাব বাড়ির মেয়ের কাছে ডাকযোগে আসা ‘সন্দেশ’ পত্রিকা সংগোপনে রেখে, পরে সুফিয়া খাতুনের হাতে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতেন। এ সময় সুফিয়ার বড় ভাই সৈয়দ আবদুল ওয়ালী বরিশালে বেল ইসলামিয়া হোস্টেলে থেকে লেখাপড়া করতেন। বাংলার প্রতি আগ্রহের কথা শুনে, ঐ হোস্টেলের পণ্ডিত বাদশা মিয়া শিশু সুফিয়ার জন্য বাংলা বইও সংগ্রহ করে দিতেন। মাত্র ৭ বছর বয়সে কলকাতায় বেগম রোকেয়ার সাথে তাঁর প্রথম সাক্ষাৎ হয়। কিন্তু পরিবারের রক্ষণশীলতার কারণেই বেগম রোকেয়ার স্থাপিত সাখাওয়াত মেমোরিয়াল স্কুলের ভর্তির হতে পারেন নি।
১৯২৩ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর মামাত ভাই সৈয়দ নেহাল হোসেনের সাথে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। বিয়ের পর সুফিয়া ও নেহাল হোসেন বরিশাল শহরে চলে আসেন। বরিশালে সে সময় খেলাফত ও অসহযোগ আন্দোলনের পর এ.কে. ফজলুল হক ও আবুল হাশেমের নেতৃত্বে জমিদারদের বিরুদ্ধে প্রজারা আন্দোলনে মেতে উঠেছে। এ সময় বরিশাল থেকে সরল কুমার দত্ত সম্পাদিত ‘তরুণ’ পত্রিকার সাথে নেহাল হোসেন জড়িত হন। তাঁর প্রচেষ্টায় এই পত্রিকার প্রথম বর্ষ ৩য় সংখ্যায়, মিসেস এস.এন. হোসেন নামে সুফিয়ার প্রথম লেখা ‘সৈনিক বধূ’ প্রকাশিত হয়। সে সময় লেখাটি অত্যন্ত প্রশংসা অর্জন করেছিল। এ সময় বাংলার অন্যতম গীতিকবি কামিনী রায় বরিশালে আসেন। একজন মুসলমান মেয়ে গল্প ও কবিতা লিখছেন এ কথা শুনে তিনি নিজে সুফিয়ার বাসায় গিয়ে তাঁকে উৎসাহিত করেন।
সৈয়দ নেহাল হোসেন ছিলেন প্রগতিবাদী ও নারী শিক্ষার সমর্থক। স্বামীর উৎসাহ ও অনুপ্রেরণায় সুফিয়া বেগম প্রচুর বই পড়া এবং লেখার সুযোগ লাভ করেছিলেন। নেহাল হোসেনের ঐকান্তিক সহযোগিতায় তাঁর লেখা পত্রিকায় প্রকাশের সুযোগ ঘটে। এই কারণে সৈয়দ নেহাল হোসেনকে পরিবারের পক্ষ থেকে প্রচুর গঞ্জনা সহ্য করতে হয়েছিল।
১৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে মাতৃমঙ্গল নামক সংগঠনের তিনি একমাত্র মুসলিম সদস্য ছিলেন। গান্ধীজী বরিশালে এলে সুফিয়া খাতুন হিন্দু মহিলাদের সাথে, তাঁদের মতো কাপড় পরে কপালে সিঁদুর দিয়ে প্রকাশ্য সভায় নিজের হাতে-কাটা সুতা নিয়ে গান্ধীজীর হাতে তুলে দিয়েছিলেন।
১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দে সুফিয়া এন. হোসেন নামে ‘সওগাত’ পত্রিকাতে তাঁর প্রথম কবিতা পাঠান। এই কবিতাটিতে ত্রুটি ছিল। কোনো মুসলমান মেয়ের রচনা হিসাবে পত্রিকার সম্পাদক নাসিরউদ্দীন বিশেষ উৎসাহ বোধ করেন এবং কবিকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য, পত্রিকার চৈত্র সংখ্যায় তিনি তা ছাপার ব্যবস্থা করেন। এই কবিতাটি ছিল ‘বাসন্তী’। পরে তিনি সওগাতের নিয়মিত লেখিকাতে পরিণত হন। ১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দ (ভারত ভাগের আগে পর্যন্ত) তিনি ‘সওগাত’-এ লিখেছেন। ভারত বিভাগের পর ঢাকায় আসার পূর্বে ‘সওগাত’-এ বৈশাখ, ১৩৫৪ (১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দ) সংখ্যায় তাঁর সর্বশেষ লেখা ‘মালতীর প্রত্যাশা’ প্রকাশিত হয়।
১৯২৬ খ্রিষ্টাব্দের তাঁর প্রথম সন্তান আমেনা খাতুন (দুলু) জন্মগ্রহণ করে।
১৯২৭ খ্রিষ্টাব্দে কাজী নজরুল ইসলামের সাহায্য করার জন্য সওগাত পত্রিকার সম্পাদক নাসিরুদ্দিনকে এক চিঠিতে অনুরোধ জানান।
১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দে পারিবারিক ও সামাজিক প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে প্রথম বাঙালি মুসলমান নারী হিসাবে বিমানে উড্ডয়ন করেন। তাঁর কাজের জন্য বেগম রোকেয়া তাঁকে বিশেষভাবে অভিনন্দিত করেন।
১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ‘আঞ্জুমানে খাওয়াতীন ইসলাম’-এর সদস্যা হয়ে কাজ শুরু করেন। এই বৎসরে রবীন্দ্রনাথের আমন্ত্রণে জোড়াসাঁকোর ঠাকুর বাড়িতে যান। রবীন্দ্রনাথে তাঁকে তাঁর রচিত ‘গোরা’ উপন্যাস উপহার হিসাবে দেন।
১৯৩০ খ্রিষ্টাব্দে নাসিরউদ্দীন লেখিকাদের ছবিসহ ‘মহিলা সওগাত’ প্রকাশ করার উদ্যোগ নেন। সুফিয়া খাতুনের ছবি ব্যবহারের জন্য নাসিরউদ্দীন সৈয়দ নেহাল হোসেনকে জানালে, তিনি সম্মতি দেন। তাঁর প্রথম ছবি তোলা হয় সি. গুহ-এর স্টুডিওতে। মহিলা সওগাত’ প্রকাশিত হয় ভাদ্র ১৩৩৬ সংখ্যায়। এই পত্রিকায় সুফিয়া খাতুনের ছবিসহ বিড়ম্বিতা কবিতা প্রকাশিত হয়।
১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দে ইন্ডিয়ান উইমেন্স ফেডারেশন-এর প্রথম মহিলা সদস্যা মনোনীতা হন।
১৯৩২ খ্রিষ্টাব্দের ১৯ ডিসেম্বর ক্ষয়রোগ নেহাল হোসেনের মৃত্যুবরণ করেন। স্বামীর অকাল মৃত্যুতে সুফিয়ার জীবনে নেমে আসে চরম দুর্যোগ ও দুর্ভোগ।
১৯৩৩ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতা কর্পোরেশনের তৎকালীন এডুকেশন অফিসার শ্রীযুক্ত ক্ষিতীশ প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়, নিজ উদ্যোগে কলকাতা কর্পোরেশন স্কুলে সুফিয়া খাতুনকে শিক্ষকতার চাকুরির ব্যবস্থা করে দেন। এই সময় তিনি পঞ্চাশ টাকা মাইনের পেতেন। তিন মাসের মধ্যে তিনি নিজ যোগ্যতার পরিচয় দিয়ে শিক্ষয়িত্রী পদে স্থায়ীভাবে বহাল হন।
১৯৩৭ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘কেয়ার কাঁটা’ প্রকাশিত হয়। এরপর ১৯৩৮ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত হয় কাব্যগ্রন্থ ‘সাঁঝের মায়া’। উল্লেখ্য কবি বেনজীর আহমদ নিজ খরচায় ‘কেয়ার কাঁটা’ ও ‘সাঁঝের মায়া’ প্রকাশের দায়িত্ব নিয়েছিলেন এবং লেখক-সম্মানীর ব্যবস্থাও করেছিলেন। এছাড়া কাজী নজরুল ইসলাম স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে ‘সাঁঝের মায়া’র ভূমিকা লিখে সুফিয়ার সাহিত্যিক মর্যাদা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন।
১৯৩৯ খ্রিষ্টাব্দের ৮ই এপ্রিলে চট্টগ্রামের চুনতীর কামালউদ্দিন খানের সাথে তাঁর পুনরায় বিবাহ হয়। বিবাহের পর তিনি সুফিয়া কামাল নামে পরিচিত হন।
১৯৪০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। এই বৎসরে তাঁর পুত্র শাহেদ কামালের জন্ম হয়।
১৯৪১ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর মা সৈয়দা সাবেরা খাতুন মৃত্যুবরণ করেন। ১৮৪৩ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর পুত্র আহমেদ কামালের জন্ম হয়। ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে জন্ম হয় সাজেদ কামালের।
১৯৪৬ খ্রিষ্টাব্দে কলকাতায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সময়, সুফিয়া কামাল দাঙ্গা দমনের কর্মকাণ্ড এবং সেবাকার্যে আত্মনিয়োগ করেন। নিজ কন্যা আমেনা খাতুন ও বেগম মরিয়ম মনসুরের কন্যা জাকিয়া মনসুরকে নিয়ে কলকাতা ব্রেবোর্ন কলেজ সেন্টারে আশ্রয়কেন্দ্র পরিচালনা করেন। দাঙ্গার পর কামরুল হাসান, তাঁর ভাই হাসান জান ও অন্যান্য মুকুলফৌজ কর্মীদের নিয়ে সুফিয়া কামাল কংগ্রেস একজিবিশন পার্কের মধ্যেই ‘রোকেয়া মেমোরিয়াল স্কুল’ নামে একটি কিন্ডারগার্টেন পদ্ধতির স্কুল চালু করেন। এ সময় বিভিন্নমুখী কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে কামরুল হাসান ও জয়নুল আবেদীন এই দুই উদীয়মান তরুণ শিল্পী সুফিয়া কামালের অনুজ-সম স্নেহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
সহিত্যক্ষেত্রে নারীদের এগিয়ে নেওয়ার জন্য, মোহাম্মদ নাসিরউদ্দীন ‘সাপ্তাহিক বেগম’ প্রকাশের পরিকল্পনা নেন। ‘সাপ্তাহিক বেগম’ প্রথম আত্মপ্রকাশ করে ১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দের ২০শে জুলাই। কলকাতায় ‘সওগাত’ অফিস থেকে প্রকাশিত ‘সাপ্তাহিক বেগম’-এর প্রথম সম্পাদিকা মনোনীত হয়েছিলেন কবি সুফিয়া কামাল।
১৯৪৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি কলকাতা থেকে ঢাকাতে আসেন। সে সময় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষাকল্পে ‘শান্তিকমিটি’ নামে একটি সংগঠন স্থাপিত হয়েছিল। প্রখ্যাত নারীনেত্রী লীলা নাগ-এর অনুরোধে তিনি ‘শান্তিকমিটি’-র কাজে আত্মনিয়োগ করেন এবং সভানেত্রী মনোনীত হন।
১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দের আগস্ট মাসে পূর্ব-পাকিস্তানের বিভিন্ন জেলার প্রগতিশীল মহিলা নেত্রী ও কর্মীদের উদ্যোগে গঠিত হয় ‘পূর্ব পাকিস্তান মহিলা সমিতি’। এই সংগঠনের সভানেত্রী নির্বাচিত হন সুফিয়া কামাল, যুগ্ম সম্পাদিকা যুঁই ফুল রায় ও নিবেদিতা নাগ।
১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দে সুলতানা কামাল (লুলু)-এর জন্ম হয়।
১৯৫১ খ্রিষ্টাব্দের শেষ দিকে সমাজ-সচেতন মহিলাদের এক সমাবেশে গঠিত হয় ‘ঢাকা শহর শিশু রক্ষা সমিতি’। এই সংগঠনের তিনি সভানেত্রী নির্বাচিত হন।
এই কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে তিনি বাংলাভাষা আন্দোলনের সাথে ক্রমে ক্রমে জড়িয়ে পড়েন। ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে ভাষা আন্দোলন উপলক্ষে তিনি অজস্র কবিতা প্রবন্ধ রচনা করেন। (১৯৯১ সালে বাংলা একাডেমী থেকে প্রকাশিত ‘একুশের সংকলন : গ্রন্থপঞ্জি’-তে তাঁর একুশ ভিত্তিক ৬৫টি কবিতার উল্লেখ আছে।)। ভাষা আন্দোলনের পর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে মুসলিম লীগ পরাজিত হয়। এ সময় এই আন্দোলনের প্রতি সুফিয়া কামাল পূর্ণ সমর্থনের ঘোষণা দেন। যুক্তফ্রন্ট সরকারের সময় লবণ ও তেলের দাম বাড়ানো হলে সকল স্তরের ও সংগঠনের মহিলারা মন্ত্রী আতাউর রহমান খানকে রাস্তায় ঘেরাও করেছিলেন। এ আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সুফিয়া কামাল। এই বৎসর তাঁর কন্যা সাঈদা কামালন (টুলু)-এর জন্ম হয়।
১৯৫৪ খ্রিষ্টাব্দে ‘ওয়ারি মহিলা সমিতি’র প্রতিষ্ঠা করেন এবং প্রথম সভানেত্রী হন।
১৯৫৫ খ্রিষ্টাব্দে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে তিনি ঢাকার রাজপথে প্রথম মহিলাদের ঘেরাও আন্দোলন পরিচালনা করেন।
১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি দিল্লিতে সাহিত্য সম্মেলনে যোগদান করেন। অবিভক্ত বাংলার শিশু সংগঠন ‘মুকুল ফৌজ’-এর আদলে ১৯৫৬ খ্রিষ্টাব্দের ৫ই অক্টোবর তাঁর বাসভবনে প্রগতিশীল শিশু সংগঠন ‘কচি কাঁচার মেলা’, প্রতিষ্ঠা করেন। এই প্রতিষ্ঠানের উপদেষ্টা ছিলেন তিনি। অন্য শিশু সংগঠন ‘চাঁদের হাট’-এর সাথেও তিনি জড়িত ছিলেন।
১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর নেতৃত্বে গঠিত হয় ‘বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত স্মৃতি কমিটি’ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম ছাত্রীনিবাসের নাম ‘রোকেয়া হল’ রাখার প্রস্তাব করা হয়।
১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে সামরিক শাসন, সরকারি ভয়ভীতি, নিষিদ্ধ রাজনীতির থমথমে পরিবেশে রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান পালিত হয়। রবীন্দ্র শতবার্ষিকী উদ্যাপনের পর, এঁদের একটি দল ঢাকার অদূরে জয়দেবপুরে বনভোজনে যান। সেখানে ছায়ানট নামক সংগঠনের প্রতিষ্ঠার কথা আলোচিত হয়। সেই সূত্রে সুফিয়া কামালকে সভাপতি এবং ফরিদা হাসানকে সম্পাদক করে প্রথম কমিটি গঠিত হয়।
প্রতিক্রিয়াশীল মৌলবাদী গোষ্ঠী ‘মুসলিম পারিবারিক আইন ১৯৬১’-র বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালালে, ১৯৬৩ খ্রিষ্টাব্দে শামসুন্নাহার মাহমুদ ও সুফিয়া কামালের নেতৃত্বে নারী মুক্তি আন্দোলনের বিভিন্ন সংগঠন এর প্রতিবাদ করে। এই বৎসরে তাঁর পুত্র আহমেদ কামাল আততায়ীর হাতে নিহত হয়।
১৯৬৫ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ‘নারীকল্যাণ সংস্থা’ এবং ‘পাক-সোভিয়েত মৈত্রী সমিতি’-র সভানেত্রী নির্বাচিত হন। এই বৎসরে পাকিস্তান বিরোধী মনোভাব তীব্রতর হয়ে উঠে। এই সময়ে আইয়ুব খান বুদ্ধিজীবীদের সাথে আলোচনার জন্য ঢাকায় আসেন। সুফিয়া কামাল আইয়ুব খানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনি সব শুনুন এবং এর একটা সমাধান করে দিয়ে যান’। আইয়ুব খান উদ্ধত কণ্ঠে তাঁর কথার জবাব দিলেন, ‘ওধার তো সব ইনসান হ্যায়, এধার তো সব হাইওয়ান’ (ওদিকে তো সব মানুষ, এদিকে তো সব জানোয়ার)। বেগম সুফিয়া কামাল আইয়ুব খানের মুখের উপর তীব্র ভাষায় উত্তর ছুঁড়ে দিলেন, ‘আপ তো উও হাইওয়ানকৌ প্রেসিডেন্ট হ্যায়’ (আপনিত সেই জানোয়ারদেরই প্রেসিডেন্ট)।
১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে তিনি মস্কোতে ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ উৎসবে যোগদানের উদ্দেশ্যে সোভিয়েত ইউনিয়ন যান। করেন।
১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি আইয়ুব বিরোধী মহিলাদের সমাবেশে সভানেত্রীত্ব ও মিছিলে নেতৃত্ব দেন। এই বৎসরে গঠিত হয় ‘মহিলা সংগ্রাম পরিষদ’ এবং তিনি এই পরিষদের সভানেত্রী নির্বাচিত হন। এই বৎসরে তিনি, ১৯৬১ খ্রিষ্টাব্দে পাকিস্তান সরকার কর্তৃক দেওয়া ‘তঘমা-ই-ইমতিয়াজ’ প্রত্যখ্যান করেন।
১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দের ঘূর্ণিঝড়ে তিনি দক্ষিণ বাংলায় রিলিফ বিতরণে নেতৃত্ব দেন তিনি। এই বৎসর তিনি সোভিয়েত ইউনিয়ন কর্তৃক প্রদেয় ‘লেলিন পদক’ লাভ করেন। এই বৎসরে ‘সমাজ উন্নয়ন সংস্থা’র সভানেত্রী নির্বাচিত হন।
১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের মার্চ মাসে অসহযোগ আন্দোলনের সময় ঢাকায় অনুষ্ঠিত মহিলাদের সমাবেশে ও মিছিলে নেতৃত্ব দেন তিনি। এই সময় পাকিস্তানের পক্ষে স্বাক্ষর দান প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর দুদিন আগে প্রেসিডেন্ট হাউসে ইয়াহিয়া খানের সাথে বৈঠকে যে যুক্তিপূর্ণ বক্তব্য রেখেছিলেন এবং মানসিক দৃঢ়তার পরিচয় দিয়েছিলেন তা স্বয়ং ইয়াহিয়া খানকে পর্যন্ত বিস্মিত করেছিল।
মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকে তিনি নজরবন্দী ছিলেন। বাড়ির সামনে সব সময় সেনাবাহিনী থাকতো। দূরবীন দিয়ে তাঁর বাড়ির উপর নজর রাখতো। তাঁর বাসায় কেউ এলে তল্লাশী চালাতো, যানবাহনের নাম্বার লিখে রাখতো। তাঁর চলাচলের ব্যাপারে গোয়েন্দা বিভাগ তৎপর ছিল। একসময় গুজব উঠেছিল সুফিয়া কামালকে পাকিস্তানী সেনাবাহিনী হত্যা করেছে। বিদেশে এ খবরের প্রতিক্রিয়ার কারণে, পাকিস্তান সরকারী প্রচার মাধ্যম তাঁর ছবি ও সাক্ষাৎকার নিতে চাইলো, তিনি তা প্রথমে প্রত্যাখ্যান করেন। পরে বাধ্য তিনি শুধু বলবেন যে, তিনি জীবিত। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ‘আপনি কেমন আছেন?’ তিনি বললেন, ‘আমি মরিনি।’ প্রশ্ন করা হলো, ‘সাহিত্যকর্ম কেমন চলছে? ‘তিনি বললেন, ‘এ অবস্থায় যেমন চলে।’ এরপর তিনি কোন প্রশ্নের জবাব দিলেন না।
এ সময়ে তাঁর অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কথা ভেবে সোভিয়েত সরকার তাঁকে বিশেষ বিমানে সোভিয়েত ইউনিয়ন নিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব পাঠালেন। কিন্তু তিনি তাতে রাজি হলেন না, বললেন, ‘এখন আমি এ দেশ ছেড়ে বেহেশতেও যেতে রাজি নই। আমার দেশের মানুষেরা শান্তি পাক, সোয়াস্তি লাভ করুক – এ দেখে যেন আমি এ মাটিতেই শুয়ে থাকতে পারি।’ মুক্তিযুদ্ধের পুরো নয় মাস তিনি ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরের নিজস্ব বাসাতে ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধারা গোপনে তাঁর সাথে যোগাযোগ রাখতেন। মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনদের অনেকে চলে যাওয়ার সময় তাঁর কাছে রেশন কার্ড রেখে যান। এই সমস্ত কার্ড দিয়ে তিনি চাল, ডাল ইত্যাদি তুলে নিজের বাসায় জমা করে রাখতেন। মুক্তিযোদ্ধারা সময় সুযোগ করে এসে নিয়ে যেতেন। পেছন দিয়ে দেওয়াল ডিঙিয়ে মুক্তিযোদ্ধারা, বিশেষ করে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম মূল সংগঠক বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর মাথায় করে বস্তাভর্তি খাদ্যদ্রব্য নিয়ে যেতেন। জীবন-মরণের এই চরমতম সন্ধিক্ষণে প্রতি মুহূর্তে টেনশনের মধ্যে থেকেও তিনি নয় মাসে নয়টি কাঁথা সেলাই করেছিলেন। তাঁর নিজের ভাষায় : ‘কাঁথা সেলাই করেছি নয় মাসে নয়টি। প্রত্যেকটি ফোঁড় আমার রক্তাক্ত বুকের রক্তে গড়া’। এই নয় মাসে তিনি প্রতিদিনের ঘটনার বর্ণনা এবং তাঁর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া ডায়েরিতে লিখে রাখতেন। যা পরবর্তীতে ‘একাত্তরের ডায়েরী’ নামে প্রকাশিত হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় নির্যাতিত নারীদের আশ্রয় দিতে, নিরাপদ আশ্রয় খুঁজে দিতে এবং নিরাপদ আশ্রয়ে পাঠিয়ে দিতে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের চূড়ান্ত মুহূর্তে সুফিয়া কামালকে হত্যার উদ্দেশ্যে ময়মনসিংহ থেকে আল বদর বাহিনীর বিশেষ ক্যাডার নিয়ে আসা হয়েছিল। মুক্তিবাহিনীর সতর্ক প্রহরার কারণে তিনি বেঁচে যান উল্টা তারাই মুক্তিবাহিনীর হাতে মারা যায়।
যুদ্ধ শেষে নির্যাতিত মহিলাদের পুনর্বাসনের কাজে তিনি আত্মনিয়োগ করেন। সেসময় ‘নারী পুনর্বাসন সংস্থা’-র সভানেত্রী ছিলেন তিনি। স্বাধীনতার পর তিনি ‘মহিলা পরিষদ’-র মাধ্যমে নারী সমাজের সার্বিক মুক্তির কাজে নিজেকে নিয়োজিত করেন।
১৯৭২ খ্রিষ্টাব্দে মহিলা পরিষদের সভানেত্রী হিসাবে তিনি বুলগেরিয়া, পূর্ব-জার্মানী ও সোভিয়েত ইউনিয়ন ভ্রমণ করেন।
১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ‘মোর যাদুদের সমাধি পরে’ – কাব্যগ্রন্থের ইংরেজী অনুবাদ ‘Where my darlings lie buried’ প্রকাশিত হয়।
১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দের ১৫ই আগষ্ট বঙ্গবন্ধুর নৃশংস হত্যাকাণ্ড তাঁকে আবার প্রতিবাদী করে তোলে। সম্পূর্ণ বৈরী পরিবেশে সব ভয়ভীতিকে উপেক্ষা করে তিনি এ হত্যাকাণ্ডেরর প্রতিবাদ করলেন।
১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে তাঁর স্বামী কামালউদ্দীন খান মৃত্যুবরণ করেন।
১৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে তিনি রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদের সভানেত্রী নির্বাচিত হন।
১৯৮৪ খ্রিষ্টাব্দে মস্কো থেকে ‘সাঁঝের মায়া’-র রুশ সংস্করণ প্রকাশিত হয়। মস্কোতে এক সংবর্ধনা সভায় বেগম সুফিয়া কামালকে শ্রদ্ধা জানাতে গিয়ে এক রাশিয়ান তরুণ কবি বলেছিলেন, ‘আপনি গোর্কির মা উপন্যাসের জননী।’
১৯৮৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ‘বঙ্গবন্ধু পরিষদ’-র সভানেত্রী নির্বাচিত হন।
১৯৯০ খ্রিষ্টাব্দের গণঅভ্যুত্থানের সময় আশি বছর বয়সে কার্ফূর মধ্যে মৌন মিছিলে নেতৃত্বদান ছিল তাঁর সংগ্রামী জীবনের এক উল্লেখযোগ্য ঘটনা, যা সে সময়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে সংগ্রামরত দেশবাসীকে উজ্জীবিত করেছিল।
১৯৯৯ সালে ২০শে নভেম্বর শনিবার সকালে বার্ধক্যজনিত কারণে এই অনন্য নারী মৃত্যুবরণ করেন। সম্পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ২৮শে নভেম্বর তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী তাঁকে আজিমপুর কবরস্থানে সমাহিত করা হয়।
এ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন ছেলে শাহেদ কামাল (শামীম), আহমদ কামাল (শোয়েব), সাজেদ কামাল (শাব্বীর) এবং মেয়ে সুলতানা কামাল (লুলু) ও সাঈদা কামাল (টুলু)। শোয়েব ১৯৬৩ সালে ১৩ মে রহস্যজনকভাবে মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৭৭ সালের ৩রা অক্টোবরে আকস্মিকভাবে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে সুফিয়া কামালের দ্বিতীয় স্বামী কামালউদ্দীন খান মারা যান।
বেশ কয়েকবার তিনি রবীন্দ্রনাথের সাথে সাক্ষাৎ করেছেন এবং উভয়ের ভিতর চিঠিপত্র আদান-প্রদান হয়েছে। এছাড়া নজরুল ইসালেমের সাথেও তাঁর চিঠিপত্র আদানপ্রেদান হয়েছে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে কলকাতায় তাঁর বাসায় বোমা হামলার কারণে সেসব চিঠি ধ্বংস হয়ে যায়। ১৯৮৬ খ্রিষ্টাব্দে সুফিয়া কামাল শান্তিনিকেতনে বেড়াতে গেলে রবীন্দ্র ভবনের পরিচালক ড. নরেশ গুহ শান্তিনিকেতনে রক্ষিত তাঁকে লেখা রবীন্দ্রনাথের চিঠিসমূহের অনুলিপির একটি সেট উপহার দেন। রবিউদ্দিন আহমদ নামে একজন সাহিত্য-গবেষক নজরুলের চিঠিপত্র নিয়ে অসুস্থ নজরুলের চিকিৎসার জন্য প্রদর্শনী আয়োজনের মাধ্যমে অর্থসংগ্রহের উদ্দ্যেশে। সে চিঠিগুলোও পরে হারিয়ে যায়।
প্রকাশিত গ্রন্থ তালিকা
কেয়ার কাঁটা (প্রথম গল্পগ্রন্থ)। প্রথম প্রকাশ : ১৯৩৭
সাঁঝের মায়া (প্রথম কাব্যগ্রন্থ)। প্রথম প্রকাশ : ১৯৩৮
মায়া কাজল (দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ)। প্রথম প্রকাশ : ১৯৫১
মন ও জীবন (তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ)। প্রথম প্রকাশ : ১৯৫৭
উদাত্ত পৃথিবী (চতুর্থ কাব্যগ্রন্থ)। প্রথম প্রকাশ : জুন, ১৯৬৪
ইতল বিতল (শিশুতোষ)। প্রথম প্রকাশ : ১৯৬৫
দীওয়ান (পঞ্চম কাব্যগ্রন্থ)। প্রথম প্রকাশ : ১৯৬৬
সোভিয়েতের দিনগুলি (ভ্রমণ কাহিনী)। প্রথম প্রকাশ : জুলাই, ১৯৬৮
প্রশস্তি ও প্রার্থনা (ষষ্ঠ কাব্যগ্রন্থ)। প্রথম প্রকাশ : সেপ্টেম্বর, ১৯৬৮
অভিযাত্রিক (সপ্তম কাব্যগ্রন্থ)। প্রথম প্রকাশ : মার্চ, ১৯৬৯
মৃত্তিকার ঘ্রাণ (অষ্টম কাব্যগ্রন্থ)। প্রথম প্রকাশ : ১৯৭০
মোর যাদুদের সমাধি পরে (নবম কাব্যগ্রন্থ)। প্রথম প্রকাশ : সেপ্টেম্বর, ১৯৭২
নওল কিশোরের দরবারে (শিশুতোষ)। প্রথম প্রকাশ : মার্চ, ১৯৮১
একালে আমাদের কাল (আত্মজীবনীমূলক রচনা)। প্রথম প্রকাশ : জুন, ১৯৮৮
একাত্তরের ডায়েরী (স্মৃতিকথা)। প্রথম প্রকাশ : ফেব্রুয়ারী, ১৯৮৯
স্বনির্বাচিত কবিতা সংকলন (সর্বমোট ৯টি কাব্যগ্রন্থ থেকে ৭০টি কবিতার সংকলন)
সাঁঝের মায়া – বলশেভনী সুমের্কী (রুশ অনুবাদ)। প্রকাশ : ১৯৮৪
প্রাপ্ত পুরস্কারের তালিকা
বুলবুল ললিতকলা একাডেমী ১৯৫৯
পাকিস্তান সরকারের তমঘা-ই-ইমতিয়াজ ১৯৬১ (প্রত্যাখান করেন ১৯৬৯)
বাংলা একাডেমী পুরস্কার ১৯৬২
বেগম ক্লাব পুরস্কার ১৯৬৪
লেনিন পুরস্কার, সোভিয়েত ইউনিয়ন ১৯৭০
অনন্যা নারী ১৯৭৫
লেখিকা সংখের নুরুন্নেসা খাতুন বিদ্যাবিনোদিনী পুরস্কার ১৯৭৬
একুশে পদক ১৯৭৬
নাসিরউদ্দিন স্বর্ণপদক ১৯৭৭
শেরে বাংলা জাতীয় সাহিত্য পুরস্কার ১৯৭৭
রিক্সা শ্রমিক সমিতি পদক ১৯৭৮
কুমিল্লা ফাউন্ডেশন পদক ১৯৭৮
ঢাকা লেডিজ ক্লাব পুরস্কার ১৯৮১
সংগ্রামী নারী পুরস্কার, চেকোশ্লোভাকিয়া (চেকোশ্লোভাকিয়ার ফ্যাসিবাদ বিরোধী পুরস্কার, বিশ্বের ১৬টি দেশের ১৬ জন সংগ্রামী মহিলাকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়) ১৯৮১
মুক্তধারা মহিলা পুরস্কার ১৯৮২
ফুলকী শিশু পুরস্কার, চট্টগ্রাম ১৯৮২
জেবউন্নিসা মাহবুবউল্লাহ্ ট্রাষ্ট পুরস্কার ১৯৮৩
কথাকলি শিল্পীগোষ্ঠী পুরস্কার ১৯৮৩
পাতা সাহিত্য পদক, ঢাকা ১৯৮৩
শহীদ নূতন চন্দ্র সিংহ স্মৃতিপদক, চট্টগ্রাম ১৯৮৫
কবিতালাপ পুরস্কার, খুলনা ১৯৮৫
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাব ১৯৮৬
রুমা স্মৃতি পুরস্কার, খুলনা ১৯৮৮
জসীমউদ্দিন পদক, ফরিদপুর ১৯৮৯
মেম্বার অব কংগ্রেস যুক্তরাষ্ট্র সনদ (বাংলাদেশ সোসাইটি অব নিউইয়র্ক) ১৯৮৯
ক্লাব অব বস্টন সনদ ১৯৮৯
বিজনেস এ্যান্ড প্রফেশনাল উইমেন্স ক্লাব পদক, ঢাকা ১৯৯১
মুজিব পদক (মুক্তিযোদ্ধা সংহতি পরিষদ) ১৯৯১
বৌদ্ধ একাডেমী পুরস্কার, চট্টগ্রাম ১৯৯১
বেগম রোকেয়া পদক (নারী কল্যাণ সংস্থা) ১৯৯২
শহীদুল্লাহ কায়সার স্মৃতিপদক (কেন্দ্রীয় খেলাঘর) ১৯৯৩
ত্রিভূজ পুরস্কার (ত্রিভূজ পরিষদ) ১৯৯৪
বেগম রোকেয়া স্বর্ণপদক ১৯৯৭
দেশবন্ধু সি. আর. দাস স্বর্ণপদক ১৯৯৮
রজত জয়ন্তী সম্মাননা (রাশিয়ান কালচারাল সেন্টার) ১৯৯৮
স্বাধীনতা পদক ১৯৯৮
তথ্যসূত্র
১. সুফিয়া কামাল – ড. সেলিম জাহাঙ্গীর; ফেব্রুয়ারী, ১৯৯৩।
২. সুফিয়া কামাল রচনাসমগ্র (প্রথম খণ্ড) – সাজেদ কামাল সম্পাদিত; জুন, ২০০২।
৩. জননী সাহসিকা বেগম সুফিয়া কামাল শেষ প্রণতি – সম্পাদনা : সৈয়দ শামসুল হক; ফেব্রুয়ারী, ২০০০।
৪. সুফিয়া কামাল – ড. সেলিম জাহাঙ্গীর; জানুয়ারী, ১৯৯৯।