Select Page
২০১৭-০৪-১৮
কিশোর রমেল চাকমাকে পিটিয়ে মেরে পেট্রোল দিয়ে লাশ পুড়িয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে কোন আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করছে সেনাবাহিনী? সরকারের কাছে জবাব চাই, বিচার চাই

স্মারক নং- না.প- ০৪/২০১৭- ৭২

বৈশাখ ১৪২৪/২৩ এপ্রিল ২০১৭


কিশোর রমেল চাকমাকে পিটিয়ে মেরে পেট্রোল দিয়ে লাশ পুড়িয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে কোন আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করছে সেনাবাহিনী? সরকারের কাছে জবাব চাই, বিচার চাই।


পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি জেলার নান্যারচরে সেনাবাহিনীর কয়েকজন কর্মকর্তা কর্তৃক উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী কিশোর রমেল চাকমাকে নিছক সন্দেহের বশে প্রথমে ধরে পিটিয়ে মেরে ফেলা, অতঃপর পেট্রোল দিয়ে লাশ পুড়িয়ে দিয়ে সকল প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা। এই ঘটনায় আমরা ভীষণভাবে মর্মাহত, ক্ষুব্ধ এবং আতঙ্কিত। আমরা অনতিবিলম্বে এই ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিচারের সম্মুখীন করার জোর দাবি জানাচ্ছি।

পার্বত্য চট্টগ্রামে থামছে না সেনাবাহিনীর অত্যাচার-নির্যাতন, গুম-খুন। অতীতে সেখানকার এ ধরনের অনেক ঘটনার কথাই কম-বেশী সকলের জানা। আবারো ঘটলো একটি নৃশংস হত্যাকান্ড! ৫ এপ্রিল ২০১৭, একটি গাড়ি পোড়ানোর ঘটনায় জড়িত থাকার সন্দেহে পার্বত্য চট্টগ্রামের রাঙামাটি জেলার নান্যারচরে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থী, একটি চোখে দেখতে না পাওয়া রমেল চাকমাকে সেনাবাহিনীর কয়েকজন কর্মকর্তা ধরে সেখানেই প্রকাশ্য দিবালোকে জনসমক্ষে পিটিয়ে হাত-পা ভেঙ্গে ফেলে এবং এই অবস্থায়ই তাকে আটক করে সেনা ক্যাম্পে নিয়ে যায়। মিথ্যা স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য সেখানেও তার উপর চলে অমানুষিক নির্যাতন। রমেল এর অবস্থা বেশী খারাপ হলে ১৮ এপ্রিল তাকে স্থানীয় থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তরের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। পুলিশ রমেলকে গ্রহণ করতে রাজী না হলে সেনা কর্মকতারা তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে পুলিশ প্রহরায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৯ এপ্রিল রমেল এর মৃত্যু হয়। ২১ এপ্রিল, পুলিশ রমেল এর লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তরের জন্য প্রথমে এ্যাম্বুলেন্সে এবং তারপরে আর গাড়িরাস্তা না থাকায় ট্রলারে করে তার গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে যাত্রা করে। রমেল এর বাড়িতে পৌঁছানোর আগেই পথিমধ্যে কয়েকজন সেনা কর্মকর্তা লাশ নিয়ে স্থানীয় ইউপি সদস্যের বাড়িতে রাখে। পরেরদিন সেনা কর্মকর্তারা একটি ট্রলারে করে রমেল এর লাশ নিয়ে অজ্ঞাত স্থানে চলে যায়। পরে জানা গেছে, তারা পেট্রোল ঢেলে আগুনে পুড়িয়ে দিয়েছে রমেলকে।

যেখানে উচ্চ আদালতের স্পষ্ট নির্দেশনা আছে যে, গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়া কাউকে আটক করা যাবে না এবং আটকাবস্থায় কোনপ্রকার নির্যাতন করা যাবে না, সেখানে কোনরকম তথ্য-প্রমাণ ছাড়া নিছক সন্দেহের বশে রমেল এর উপর সেনা কর্মকর্তাদের এই নৃশংসতা দেশের কোন আইন ও ক্ষমতার বলে? সরকার- প্রশাসন জবাব দিবেন কি?

বার্তা প্রেরক

রীনা রায়
আন্দোলন সম্পাদক

 

Pin It on Pinterest

Share This