স্মারক নং: না.প ০৭/২০২০-২১৪
৫ ভাদ্র ১৪২৭/২০ আগস্ট ২০২০
প্রতিবাদ বিবৃতি
যে কোন ঘটনার সাথে যুক্ত বা ক্ষতিগ্রস্ত নারীকে অপদস্থ ও হেয় করার সংস্কৃতি বন্ধ করুন, রুখে দাঁড়ান
ধর্ষণ, গুম, খুন, অপহরণ, প্রতারণা ইত্যাদি অপরাধের সাথে হয়তো কোন নারীর যুক্ততা থাকতে পারে। ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত বা যুক্ত নারীকে নিয়ে কুরুচিকর বক্তব্য, ভাষা, শব্দ প্রয়োগ এতটাই প্রচার-প্রচারণা পায় যে মূল ঘটনা বা অপরাধের বিষয়টিই হারিয়ে যায়। ঠিক যেমনটি ঘটেছে সেনা বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিন্হা মো. রাশেদ খান হত্যা ঘটনার ক্ষেত্রেও।
এ ঘটনায় রামু থানার মামলায় আসামি করা হয় স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া বিভাগের শিক্ষার্থী শিপ্রা দেবনাথকে। এজাহারে লেখা হয়েছে যে, সিন্হা মো. রাশেদ খান শিপ্রার ‘একান্ত’ পরিচিত। তাঁরা বেশ কিছু দিন আগে ঢাকা থেকে ‘একত্রে’ এসে নীলিমা রিসোর্টের ‘একই কক্ষে’ ভাড়া নিয়ে অবস্থান করছিলেন। এছাড়া, মেজর সিন্হা হত্যা ঘটনার পর থেকে শিপ্রা দেবনাথের বিভিন্ন ব্যক্তিগত ছবি ফেসবুকের আলোচনার তুঙ্গে এসেছে। এমনকি এক পুলিশ সুপার নিজের ফেসবুকে শিপ্রার বেশ কিছু ছবি দিয়ে অযাচিত মন্তব্য করেছেন।
বর্তমানে করোনা ভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা না করেই জাল রিপোর্ট দেয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত জেকেজির চেয়ারম্যান সাবরিনা আরিফ চৌধুরীকে নিয়ে যতটা আলোচনা, আপত্তিকর নানা মন্তব্য করা হচ্ছে একই ঘটনার সাথে যুক্ত পুরুষদের নিয়ে এধরনের আলোচনা সমালোচনা নেই।
কিছুদিন আগে শুদ্ধি অভিযানে মানিলন্ডারিং আইনে গ্রেপ্তার হওয়া শামীমা নূর পাপিয়ার ক্ষেত্রেও একই রকম মুখরোচক চর্চা হয়েছে, এখানেও একই দোষে দুষ্ট তাঁর স্বামী মফিজুর রহমান কে নিয়ে নেই তেমন কোন আলোচনা। অর্থাৎ, অপরাধ প্রমাণ বা অপরাধের বিচার নয়, বরং নারীর শরীর ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য তুলে ধরাই যেন এখানে মূখ্য বিষয়।
নারীর শরীর ও চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ও অবমাননা করার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে নারীপক্ষ গত ৩৭ বছর ধরে দেশব্যাপি প্রতিনিয়ত প্রচারণা অভিযান চালিয়ে আসছে। নারীপক্ষ আবারও আহবান জানাচ্ছে, এসব আচরণ থেকে নিজে বিরত থাকুন এবং অন্যকে বিরত করতে প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে রুখে দাঁড়ান, কার্যকর উদ্যোগ ও পদক্ষেপ নিন।
বার্তা প্রেরক,
নাজমুন নাহার শেলী
সম্পাদক, প্রচার
নারীপক্ষ