১০ ভাদ্র ১৪২৭/২৫ আগস্ট ২০২০
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর স্বদেশে প্রত্যাবর্তন ত্বরান্বিত করতে মিয়ানমার সরকারের উপর আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি এবং নারী ও শিশুর উপর সহিংসতা নিরসনসহ অনলাইনে সেবা প্রদানের জন্য সরকারী হটলাইন চালুর দাবী
২৫ শে আগস্ট ২০২০ মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বাংলাদেশে প্রবেশের তিন বছর পূর্ণ হল। কক্সবাজার জেলার রোহিঙ্গা শিবিরে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতে নারী ও শিশুর উপর সহিংসতা নিরসনে অনলাইনে সেবা প্রদানের জন্য হটলাইন নম্বর কার্যকর করা এবং রোহিঙ্গা শিবির এলাকায় মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবা সক্রিয় করার মাধ্যমে আরও সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য আমরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবী জানিয়ে আসছিলাম। সরকার রোহিঙ্গা শিবিরে ইন্টারনেট সুবিধা সহ মোবাইল ফোন সেবা চালু করবেন বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। আমরা সরকারকে এজন্য সাধুবাদ জানাচ্ছি। রোহিঙ্গা শিবিরগুলোতে প্রায় ৮ লক্ষ ৫৫ হাজার নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ব্যক্তি বসবাস করছেন। তাদের জন্ম, মৃত্যু, বিবাহ ও বিবাহ বিচ্ছেদের নিবন্ধনসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা সীমিত। করোনা ভাইরাস সংক্রমণের কারণে পারিবারিক বিরোধ ও সহিংসতার ঘটনায় প্রতিকার মূলক পদক্ষেপ নেয়া অসম্ভব হয়ে পড়েছে।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণের পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা শিবিরে ইন্টারনেট সুবিধা সহ মোবাইল ফোন এর মাধ্যমে আইনগত পরামর্শ প্রদান বা মধ্যস্থতা, স্বাস্থ্য সেবা সম্পর্কিত তথ্য, ভাইরাস সংক্রমণের তথ্য, সংক্রমিত ব্যক্তি চিহ্নিতকরণ ও পরীক্ষা সংক্রান্ত তথ্য আদান-প্রদান ও সচেতনতা মূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা সহজতর হবে।
বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বাংলাদেশে অবস্থানের সময় তিন বছর হয়ে গেলেও এব্যাপারে স্থায়ী সমাধানের অগ্রগতি হয়নি। তাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ত্বরান্বিত করতে মিয়ানমার সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা এবং এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক জনমত তৈরীতে বাংলাদেশ সরকারের যথাযথ জরুরী উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
যদিওবা আন্তর্জাতিক বিচার অঙ্গনে মামলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, এই প্রক্রিয়া শেষ হতে দীর্ঘ সময় প্রয়োজন। এই দীর্ঘ সময় মানবেতর জীবন যাপনকারী বাস্তুচ্যূত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী তাদের সামনে কোন স্থায়ী সমাধান দেখতে পারছে না বিধায় অন্যান্য সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
এমতাবস্থায় আমাদের দাবী
১. রোহিঙ্গা শিবির এলাকায় ঘোষনা অনুযায়ী অনতিবিলম্বে ইন্টারনেট সুবিধা সহ মোবাইল ফোন সেবা চালু করতে হবে
২. শিবিরে অবস্থিত রোহিঙ্গা নারী ও শিশুদের প্রতি সংঘটিত পারিবারিক সহিংসতাসহ অন্যান্য সহিংসতা নিরসন এবং এ সংক্রান্ত সেবা প্রদানে একটি বিশেষ হটলাইন চালু করতে হবে
৩. বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ত্বরান্বিত করতে মিয়ানমার সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করা এবং এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক জনমত তৈরীতে বাংলাদেশ সরকারের দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
উল্লেখিত বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর অধিকার রক্ষার পাশাপাশি আন্তর্জাতিক উদ্যোগ গুলোকে সক্রিয় করে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সহায়তা করতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি জোর দাবী জানাচ্ছি।
মিয়ানমার থেকে রোহিঙ্গা বিতারন ও বিচার প্রক্রিয়া বিষয়ক মঞ্চ এর পক্ষে
শিরীন প হক
সমন্বয়কারী “রোহিঙ্গা নারীর পাশে আমরা”, নারীপক্ষ
এবং
মন্জুর হাসান, নির্বাহী পরিচালক, সেন্টার ফর পীস অ্যান্ড জাস্টিস, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়