Select Page
২০২২-০৩-০৮
আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২২

জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত নারী’র অধিকার ও মর্যাদা উদযাপনের জন্য নির্ধারিত দিন। এর প্রকৃত নাম আন্তর্জাতিক কর্মজীবী নারী দিবস ( International Working Women’s Day), বর্তমানে এই দিবসটি আন্তর্জাতিক নারী দিবস (International Women’s Day (IWD)) নামেই পরিচিত। এই দিনের সূত্রপাত ঘটেছিল, ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দের ৮ই মার্চ তারিখে। এই দিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক শহরের সেলাই কারখানাগুলোর নারী শ্রমিকরা তাদের কিছু ন্যায্য অধিকারের দাবিতে রাস্তায় বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। তাঁদের দাবির অন্যতম দিক ছিল- ন্যায্য মুজুরী, দৈনিক ১২ ঘন্টা শ্রমের পরিবর্তে ৮ ঘণ্টা কাজ এবং বিপদজনক ও অমানবিক কর্মপরিবেশহীন কর্মস্থলের দাবি। এই বিক্ষোভে হাজার হাজার নারী শ্রমিক রাস্তায় নেমে এসে বিক্ষোভ শুরু করলে, তাঁরা পুলিশের অত্যাচারের শিকার হন। এছাড়া বহু শ্রমিককে গ্রেফতারও করা হয়।

এর বহুদিন পর, এই দিনকে সামনে রেখে ১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দে আবার নারী শ্রমিকরা রাস্তায় নামেন। সেদিনের আন্দোলনে গুরুত্ব পেয়েছিল শিশুশ্রম বন্ধ এবং নারীর ভোটাধিকারের দাবি। প্রায় ১৫ হাজার নারী এই আন্দোলনে যোগদান করেছিলেন। উল্লেখ্য এই আন্দোলনে রাস্তায় নেমেছিলেন মূলত বস্ত্র-শ্রমিকরা।

১৯০৮ খ্রিষ্টাব্দের নারী শ্রমিকদের আন্দোলনের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের জন্য, ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দের ২৮ ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সমাজতান্ত্রিক দলের (The Socialist Party of America) পক্ষ থেকে প্রথম জাতীয় নারী দিবস (National Woman’s Day (NWD) ) পালন করা হয়। ১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দে পর্যন্ত তাঁরা এই দিবস পালন করেছেন প্রতি বৎসর ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ রবিবারে।

১৯১০ খ্রিষ্টাব্দ দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক কর্মজীবী নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় কোপেনহেগেন শহরে। এই সভায় ১৭টি দেশের শতাধিক নারী-প্রতিনিধি যোগদান করেন। এর ভিতরে ছিলেন বিভিন্ন দেশের সমাজতান্ত্রিক দলের নেত্রী, কর্মজীবী মহিলা সংঘের সদস্য এবং ফিনল্যান্ডের তিনজন নব্য মহিলা সাংসদ। এই সম্মেলনে জার্মানির সমাজতান্ত্রিক দলে নারী-কার্যালয়ের নেত্রী ক্লারা জেটকিন (Clara Zetkin) আন্তর্জাতিক নারী দিবসের একটি খসড়া প্রস্তাব পেশ করেন। প্রস্তাবে তিনি বলেন, প্রতি বৎসরে একই দিনে প্রত্যেকটি দেশে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন করতে হবে। একই সাথে ৮ মার্চ ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’ নিজে পালন করেন।

Photo: ক্লারা জেটকিন (বামে), পোল্যান্ডের রোজা লুক্সেমবার্গ (১৯১০)

১৯১১ খ্রিষ্টাব্দে ক্লারা জেটকিন-এর প্রস্তাব অনুসারে অস্ট্রিয়া, জারমানি এবং সুইজারল্যান্ড-এ আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসাবে ১৫ মার্চ নির্ধারণ করা হয়। এই দিন এই দেশগুলোতে বেশ সমারোহে নারী দিবস পালন করা হয়েছিল। এই দেশগুলোর প্রায় ১০ লক্ষ নারী-পুরুষ বিভিন্ন র‌্যালিতে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এই সময় কিছু পুরাতন দাবি নতুন করে বিভিন্ন সমাবেশ থেকে উত্থাপন করা হয়েছিল। এর ভিতরে ছিল- ভোটাধিকার, সামর্থ্য বা যোগ্যতা অনুসারে অফিস-আদালতে নারীকর্মী নিয়োগের অধিকার ইত্যাদি। কিন্তু মাত্র ১০ দিন পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি নারী-হত্যাযজ্ঞ ঘটেছিল। নিউইয়র্ক শহরে নারী কর্মীদের উপর গুলিবর্ষিত হয়েছিল ২৫ মার্চে। গুলিতে ১৪০ জনের বেশি নারী মৃত্যবরণ করেছিলেন। এঁদের অধিকাংশই ছিলেন ইতালি এবং ইহুদি পরিবারগুলো থেকে আগত নারীরা। এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম-আইনে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছিল।

১৯১৩-১৯১৪ খ্রিষ্টাব্দের আন্তর্জাতিক নারী দিবসগুলো পরিচালিত হয়েছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সহিংসতা বিরুদ্ধে। রাশিয়াতে এই দিবস প্রথম উদযাপিত হয়, ১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ রবিবারে। এই সময় ইউরোপের প্রায় সকল দেশেই ৮ মার্চে এই দিবস পালন করা শুরু হয়েছিল।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে রাশিয়ার প্রায় ২০ লক্ষ সৈন্য মৃত্যবরণ করেছিল এবং আহত হয়েছিল আরও অনেক বেশি। ফলে রাশিয়ার বিপুল সংখ্যক পরিবার কর্মক্ষম পুরুষের অভাবে দারিদ্রসীমার নিচে চলে গিয়েছিল। ফলে রাশিয়ার নারীরা ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ রবিবারে ‘রুটি এবং শান্তি’-র জন্য আন্দোলন শুরু করেছিল। এর সাথে ছিল নারীর ভোটাধিকার এবং কর্মসংস্থানের দাবি। রাজনৈতিক নেতারা আন্দোলনকে সময়োপযোগী বিবেচনা না করে, তাঁদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু আন্দোলনের চারদিন পর সিজার প্রাদেশিক সরকারে অধিকার ক্ষুণ্ণ করে, জোর করেই নারীদের ভোটাধিকার প্রদান করেন। ঐ ঐতিহাসিক তিনটি জুলিয়ান পঞ্জিকা (রাশিয়াতে তখনও এই পঞ্জিকা ব্যবহার করা হতো) অনুসারে. উক্ত রবিবার ছিল ২৩ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু গ্রেগোরিয়ান পঞ্জিকা অনুসারে এই দিনটি ছিল ৮ মার্চ।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ১৯৬০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এই দিবস বিভিন্ন দেশে অনিয়মিতভাবে পালিত হয়েছে। এর পর নারীবাদী আন্দোলন এবং কার্যক্রম ক্রমে ক্রমে বেগবান হয়ে উঠলে, ১৯৭৫ খ্রিষ্টাব্দে জাতিসংঘ আন্তর্জাতিক নারী দিবসের রূপরেখা প্রণয়ন করে। এই সূত্রে আন্তর্জাতিক নারী দিবস প্রতি বৎসর ৮ মার্চ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।

তথ্যসূত্র :
http://www.internationalwomensday.com/
http://www.un.org/ecosocdev/geninfo/women/womday97.htm

 

ঘোষণাপত্র

৮ র্মাচ, আর্ন্তজাতকি নারী দবিস, যা আজ বশি^জুড়ে সমগ্র নারীসমাজরে অধকিার প্রতষ্ঠিার লড়াইয়ে পরণিত হয়ছে।

দিবসটি উদযাপনের পছেনে রয়ছেে নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ের র্দীঘ সংগ্রামরে ইতহিাস। ১৮৫৭ সালরে ৮ র্মাচ, যুক্তরাষ্ট্ররে নিউইর্য়ক শহররে সলোই কারখানার নারীশ্রমকিরা বপিদজনক ও অমানবকি র্কমপরবিশে, স্বল্প মজুরী এবং দনৈকি ১২ ঘন্টা শ্রমরে বরিুদ্ধে একটি প্রতবিাদমছিলি বরে করনে। তাদরে এ শান্তপর্িূণ মছিলিরে ওপর পুলশি হামলা চালায়। তনি বছর পরে ১৮৬০ সালরে ৮ র্মাচ, নউি ইর্য়ক শহররে পোশাকশল্পি কারখানার নারীশ্রমকিরা সংঘবদ্ধ হয়ে তাদরে দাবি আদায়রে লক্ষ্যে নজিস্ব ইউনয়িন গঠনে সর্মথ হন। ১৯০৮ সালরে ৮ র্মাচ, আবারও নউি ইর্য়ক শহরে একটি প্রতবিাদমছিলি বরে হয়, যাতে পোশাকশল্পি কারখানার নারীশ্রমকিরা যোগ দনে। ৮ র্মাচ- এর এ ঘটনাধারার সম্মলিনরে ফলে ১৯১০ সালে ডনের্মাকরে কোপনেহগেন এ দ্বতিীয় আর্ন্তজাতকি নারী সম্মলেনে র্জামান সমাজতান্ত্রকি নত্রেী ক্লারা জটেকনি এর প্রস্তাব অনুসারে ঐ দনিটকিে ‘আর্ন্তজাতকি নারী দবিস’ ঘোষণা করা হয়।

বাংলাদশেে ‘আর্ন্তজাতকি নারী দবিস কমটি’ির আয়োজনে বগিত ৩৩ বছর ধরে একএকটি সুনর্দিষ্টি প্রতপিাদ্য নয়িে আমরা দবিসটি পালন করছ।ি আমাদরে এবাররে প্রতপিাদ্য “নারীর সুরক্ষায় বনিয়িোগ বৃদ্ধি করুন।”

একজন নারী তার পরবিারে স্ত্রী, মা তথা সবেকিার দায়ত্বি পালনে একটা বড় সময় ব্যয় করনে। এর পরে আছে সামাজকি দায়ত্বি। তদুপরি সে নারী যদি হন র্কমজীবী তাহলে দনিরে ১৮ থকেে ২০ ঘন্টাই তাকে ঘর-েবাইরে সমানভাবে কাজ করে যতেে হয়। র্সবােপর,ি মানব প্রজন্ম রক্ষায় সন্তান জন্মদানসহ লালন-পালন করার মূল দায়ত্বিটওি নারীরই। পারবিারকি ও জাতীয় র্অথনীততিওে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে নারীর অবদান গুরুত্বর্পূণ, অথচ নারীর র্মযাদার্পূণ ও সুরক্ষতি জীবনরে জন্য পরবিার ও রাষ্ট্ররে কোথাও র্পযাপ্ত বনিয়িোগ নইে!

নারীকে দতিে হবে একজন পরপর্িূণ মানুষরে র্মযাদা এবং নশ্চিতি করতে হবে তার র্সাবকি সুরক্ষা; এর জন্য ন¤িœোক্ত পদক্ষপেসমূহ গ্রহণ করা অতবি জরুরী:
ক্স শক্ষিা ও র্কমক্ষত্রে, যানবাহন ও যাতায়াত পথসহ পারবিারকি ও সামাজকি জীবনরে প্রতটিি ক্ষত্রেে নারীর র্সাবকি সুরক্ষা নশ্চিতি করতে সরকারি ও বসেরকারি র্পযায়ে র্কাযকর উদ্যোগ গ্রহণ ও তা বাস্তবায়নে র্পযাপ্ত র্অথ বরাদ্দ রাখা
ক্স বাংলাদশে র্কতৃক স্বাক্ষরকৃত ‘নারীর প্রতি সকল প্রকার বষৈম্য বলিোপ’ আর্ন্তজাতকি সনদ অনুযায়ী, সকল বষৈম্যমূলক আইন, নীতমিালা, র্কমসূচ,ি প্রথা, র্চচা এবং বধি-িবধিান সংশোধন ও বলিুপ্ত করা; প্রয়োজনে নতুন আইন প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নরে জন্য র্পযাপ্ত র্অথ বনিয়িোগ করা
ক্স খাদ্য, বাসস্থান, চকিৎিসা ও শক্ষিাসহ নারীর র্সাবকি কল্যাণ নশ্চিতি করতে সম-অধকিাররে ভত্তিতিে বাজটে তরৈি ও ক্ষত্রেমতো অতরিক্তি র্অথ বরাদ্দ করা।

উপরোক্ত পদক্ষপেসমূহরে র্কাযকর বাস্তবায়নে সরকার ও জাতীয় মানবাধকিার কমশিন র্কতৃক নয়িমতি পরবিীক্ষণ করা, জবাবদহিতিার আওতায় আনা এবং এরজন্য র্পযাপ্ত র্অথ বরাদ্দ দয়ো সময়রে দাব।ি

আর্ন্তজাতকি নারী দবিস কমটিি
ফাল্গুন ১৪৩০/র্মাচ ২০২৪

Pin It on Pinterest

Share This