Select Page
২০২২-১১-০৪
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন যৌন সহিংসতার শিকার বীরাঙ্গনা নারীদের প্রথম সংহতি সম্মিলন শেষে সংবাদ সম্মেলন

০৯ অগ্রহায়ণ ১৪২৯/ ২৪ নভেম্বর ২০২২ সংঘাতকালীন যৌন সহিংসতার শিকার নারীদের একটি বিশেষ সংহতি সম্মিলন অনুষ্ঠিত হয়েছে যেখানে কুড়িগ্রাম, রাজশাহী ও ময়মনসিংহের বীরাঙ্গনা নারী এবং মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দ্বারা যৌন সহিংসতার শিকার রোহিঙ্গা নারীরা আন্তর্জালের মাধ্যমে অংশগ্রহণ করেন। এই সম্মিলনের মূল অধিবেশন সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১২.০০ মিনিট পর্যন্ত আন্তর্জালে অনুষ্ঠিত হয়। এরপর নারীপক্ষ প্রযোজিত দ্বীপ্ত টেলিভিশনের পরিচালক একেএম মাহাদী সোমেন পরিচালিত প্রামান্য চিত্র ‘বীরাঙ্গনা আখ্যান’ প্রথম প্রদর্শন এর মাধ্যমে দুপুর ১ টায় সম্মিলন সমাপ্ত হয় এবং সম্মিলন শেষে বেলা ৩ টায় সংবাদ সম্মেলন হয়। সম্মেলন শেষে নারীপক্ষ প্রযোজিত রেহানা সামদানী কনা পরিচালিত বীরাঙ্গনা বিষয়ক একটি প্রামান্যচিত্র দেখানো হয়।

এই সম্মিলনের আগে নারীপক্ষ রাজশাহী, কুড়িগ্রাম এবং ময়মনসিংহের বীরাঙ্গনা নারীদের সাথে এবং স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গের সাথে পরামর্শ সভা করে। প্রতিটি এলাকায় ২দিন ধরে এই আলোচনা চলে।
বীরাঙ্গনা বোনেরা তাদের উপর অত্যাচারের ক্ষতিপূরণের যেসব দাবী জানান এবং স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ তাদের এলাকায় ক্ষতিপূরণ এবং স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য সর্বোত্তম কী উপায় গ্রহণ করতে পারেন সে বিষয়ে আলোচনা হয়। আলোচনা থেকে যে সব বিষয উঠে আসে তা নিম্নরূপ-

* সরকারী তালিকাভুক্ত বীরাঙ্গনা বোনেরা ২০ হাজার টাকা মাসিক ভাতা পান তাদের জীবনে এক ধরণের স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তা বোধ নিয়ে এসেছে। তবে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তাদের ছেলে-মেয়েরা মোট অর্থ না দিয়ে, না জানিয়ে নিজের খরচ বাবদ কিছু অংশ রেখে দেয়। কিন্তু যারা সরকারী তালিকাভুক্ত নন তাঁরা নিয়মিতভাবে নারীপক্ষ থেকে মাসিক ভাতা পাচ্ছেন যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। বীরাঙ্গনা বোনেরা তাদের সরকারী তালিকাভুক্ত করার জোর দাবি জানিয়েছেন

* বীরাঙ্গনারা যাদের বয়স ৭০ থেকে ৮০ বয়সের কোঠায় তাঁরা জানান, পরিবারে অভাবের কারণে অনেকেই পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবা এবং নিয়মিতভাবে প্রয়োজনীয় ওষুধ ক্রয় করতে সক্ষম নন। এক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে একজন সমাজকর্মী নিয়মিত তাদের খোঁজ খবর নিবে এমন কোন ব্যবস্থা করা গেলে তাঁদের জন্য অনেক উপকার হয়।

* তাঁদের বাসযোগ্য বাসস্থান ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধার ব্যবস্থা করা।

* বীরাঙ্গনাদের নারী মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য যে সরকারী প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে গণমাধ্যমে তা প্রচার করা। তাঁরা যেন সম্মানের সাথে পরিবার, সমাজ এবং রাষ্টে বসবাস করতে পারেন তার উদ্যোগ গ্রহণ করা

* বীরাঙ্গনা বা নারী মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য চিকিৎসা ক্ষেত্রে আলাদাভাবে একটি প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে তাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করা।

* জাতীয় পাঠ্যক্রমে বীরাঙ্গনা বিষয়ে আরও তথ্য অন্তর্ভুক্ত করা

* স্থানীয় এলাকায় বীরাঙ্গনা নারীদের জন্য স্মৃতিসৌধ, রাস্তা কিংবা পার্কের নামকরণ করা

* স্বাধীনতা এবং বিজয় দিবসের মতো জাতীয় উদযাপন কর্মসূচীতে বীরাঙ্গনাদের অন্তর্ভুক্ত করে সম্মানিত করা।

Pin It on Pinterest

Share This