০৩ অগ্রহায়ণ/১৮ নভেম্বর নারী আন্দোলন ও মানবাধিকার কর্মী, নারীপক্ষ’র প্রয়াত সদস্য নাসরীন হক এর জন্মতিথী। এই উপলক্ষ্যে নারীপক্ষ’র আয়োজনে অদ্য বিকাল ৪ টায় আন্তর্জালে “দক্ষিণ এশিয়ায় নারী আন্দোলন নির্মাণের প্রচেষ্ট” শীর্ষক ‘নাসরীন হক স্মারক বক্তৃতা’ অনুষ্ঠিত হয়। এবারের বক্তা ছিলেন খাওয়ার মমতাজ, প্রতিষ্ঠাতা সদস্য – উইমেনস একশন ফোরাম, পাকিস্তান ও সাবেক সভাপতি, জাতীয় মহিলা কমিশন, পাকিস্তান । স্বাগত বক্তব্য রাখেন ও অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ফিরদৌস আজীম – নির্বাহী সদস্য ও প্রাক্তন সভানেত্রী, নারীপক্ষ ।
খাওয়ার মমতাজ বলেন, প্রতিটি দেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক অবস্থান ও জাতি গঠনের উদ্যোগে নারীদের স্বাধীন কণ্ঠস্বরের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। পিছনে ফিরে তাকালে আমরা দেখতে পাই যে ভারতীয় উপমহাদেশে, জাতীয়তাবাদী সংগ্রামের প্রথম দিকে নারীদের অন্তর্ভুক্তি আন্দোলনকে কতটা গতিশীল করেছে। ইতিহাস আমাদের বলে দেয় যে রাষ্ট্র গঠন প্রক্রিয়ায় নারীদের উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিতে নারীর অধিকার এবং নারীবাদী চেতনার জোরদার বক্তব্যের জন্য সমসাময়িক আন্দোলনগুলি ৮০’র দশকের পরবর্তী ঘটনা। নারীর সকল ধরণের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে এই উপমহাদেশের নারী সংগঠন গুলো প্রধান ভূমিকা পালন করে আসছে। গৃহ থেকে রাষ্ট্র সর্বক্ষেত্রে নারীর গণতান্ত্রিক ও মানবাদিকার প্রতিষ্ঠায় নারী নেত্রিত্বের বিকাশ এবং নারী আন্দোলন আরও জোরদার করা প্রয়োজন। এই উপমহাদেশে একটি শক্তিশালী নারী আন্দোলন প্রয়োজন রয়েছে। দক্ষিন এশিয়ার ৮ টি দেশের নারী সংগঠনগুলো একসাথে মিলিত ভাবে কাজ করলে এই শক্তিশালী আন্দোলন গড়ে তলা সম্ভব। প্রশ্নত্তোর পর্ব ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন মাহীন সুলতান – নির্বাহী সদস্য ও প্রাক্তন সভানেত্রী, নারীপক্ষ।
নাসরীন হক যে সকল অধিকার আদায়ের আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন তা শুধুমাত্র নারী অধিকার আন্দোলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। তিনি চেয়েছিলেন একটি সেতু রচনা করতে, যে সেতু জাতিতে-জাতিতে, ধনী-দরিদ্র, সমতল-পাহাড়ী, শহর-গ্রামীন সকল মানুষের মধ্যে তৈরী করবে গভীর মানবিক সম্পর্ক। তিনি সংগ্রাম করেছেন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও মৌলিক অধিকার এবং নারী মুক্তির জন্য। সব ধরণের, সব শ্রেণীর, ভাষার, ধর্মের, সম্প্রদায়ের, জাতিসত্তার, যৌনপরিচিতির সর্বোপরি সামাজিক কোন পার্থক্যই তাঁর জন্য দেয়াল তৈরি করতে পারে নাই। সকলের দিকেই তিনি বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিতেন।
নারীপক্ষ মনে করে, নাসরীন হক স্মারক বক্তৃতার আয়োজন তাঁর স্বপ্ন এবং কর্মতৎপরতাকে ধরে রাখার একটি বিশেষ উপায়।