Select Page
২০২৪-১১-১৮
নাসরীন হক স্মারক বকতৃতা ২০২৪
০৩ অগ্রহায়ণ/১৮ নভেম্বর নারী আন্দোলন ও মানবাধিকার কর্মী, নারীপক্ষ’র প্রয়াত সদস্য নাসরীন হক এর জন্মতিথী। এই উপলক্ষ্যে নারীপক্ষ’র আয়োজনে অদ্য সন্ধ্যা ৬ টায় আন্তর্জালে “প্রাাণবৈচিত্র্য, বীজ ও নারী অধিকারের চার দশক” শীর্ষক ‘নাসরীন হক স্মারক বকতৃতা অনুষ্ঠিত হয়। এবারের বক্তা ছিলেন ফরিদা আখতার, লেখক, গবেষক, আন্দোলনকর্মী ও উপদেষ্টা, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার। স্মারক বক্তৃতা সম্পর্কিত স্বাগত বক্তব্য এবং বক্তাকে আহবান জানান ফিরদৌস আজীম – নির্বাহী সদস্য ও প্রাক্তন সভানেত্রী, নারীপক্ষ।
ফরিদা আখতার বলেন, বাংলাদেশ কৃষি ও প্রাণসম্পদে প্রাচুর্যপূর্ণ একটি দেশ। আমাদের রয়েছে বৈচিত্রপূর্ণ কৃষি ব্যবস্থার দীর্ঘ ঐতিহ্য সমৃদ্ধ জ্ঞানভান্ডার। আধুনিক কৃষির নামে “সবুজ বিপ্লব” এর মারফতে রাসায়নিক উপকরণ, কীটনাশক, উচ্চফলনশীল বীজ ব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রানী, কীটপতঙ্গ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে এবং আমাদের বৈচিত্রপূর্ণ কৃষিব্যবস্থা ধ্বংশের মুখে পতিত হয়েছে। নারীদের বীজ সংরক্ষণের যে ঐতিহ্য তা বিলুপ্ত হয়ে সেখানে যায়গা করে নিয়েছে প্যাকেটজাত বীজ। কিন্তু নারীরা চায় প্রকৃতিকে রক্ষা করতে। নারীদের বীজ তৈরী এবং সংরক্ষণের জ্ঞান অনেক বেশি সমৃদ্ধ। নয়াকৃষি আন্দোলন শুরু করার মূল লক্ষ্যই হচ্ছে প্রানবৈচিত্র, বীজ ও ফসলের বৈচিত্রতা ধরে রাখা। দেশীয় বীজ সংগ্রহ, রক্ষা ও পুনরৎপাদন নয়াকৃষির কর্মতৎপরতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য। একটি ফসল অনেক জায়গা জুড়ে চাষাবাদ করে জমির উর্বরতা নষ্ট না করে বিভিন্ন ফসল ফলিয়ে মাটির পুষ্টিগুন বজায় রাখতে হবে এবং আমাদের সংস্কৃতির মাঝে যে বৈচিত্রতা আছে তা টিকিয়ে রাখতে হবে। আর এক্ষেত্রে নারীদের অবদানকে অস্বীকার করার কোন জায়গা নেই।
প্রশ্নত্তোর পর্ব ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়। প্রশ্নত্তোর পর্ব সঞ্চালনা করেন কামরুন নাহার, সদস্য, নারীপক্ষ। উক্ত আলোচনায় জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আন্তর্জাল এবং সরাসরি মোট ৩০০ জন অংশগ্রহণ করেন।
নাসরীন হক যে সকল অধিকার আদায়ের আন্দোলনে যুক্ত ছিলেন তা শুধুমাত্র নারী অধিকার আন্দোলনের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। তিনি চেয়েছিলেন একটি সেতু রচনা করতে, যে সেতু জাতিতে-জাতিতে, ধনী-দরিদ্র, সমতল-পাহাড়ী, শহর-গ্রামীন সকল মানুষের মধ্যে তৈরী করবে গভীর মানবিক সম্পর্ক। তিনি সংগ্রাম করেছেন গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও মৌলিক অধিকার এবং নারী মুক্তির জন্য। সব ধরণের, সব শ্রেণীর, ভাষার, ধর্মের, সম্প্রদায়ের, জাতিসত্তার, যৌনপরিচিতির সর্বোপরি সামাজিক কোন পার্থক্যই তাঁর জন্য দেয়াল তৈরি করতে পারে নাই। সকলের দিকেই তিনি বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিতেন।
নারীপক্ষ মনে করে, নাসরীন হক স্মারক বক্তৃতার আয়োজন তাঁর স্বপ্ন এবং কর্মতৎপরতাকে ধরে রাখার একটি বিশেষ উপায়।

Pin It on Pinterest

Share This