Select Page
২০২২-১১-০৫
‘নারীর অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ’ প্রকল্প

“নারী ও মেয়ে শিশুর উপর সহিংসতা বন্ধে কথা বলার সহায়ক পরিবেশ তৈরি এবং নির্যাতন বন্ধ করা” এই লক্ষ্য ইউকেএইড এবং মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহযোগীতায় ২০১৯-২০২১ সাল পর্যন্ত ‘নারীর অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ’ প্রকল্পের মাধ্যমে নারীপক্ষ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। নারীপক্ষ ঢাকার বাহিরে ৪টি সহযোগী সংগঠন জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, জয়পুরহাট ও ঝিনাইদহসহ ঢাকায় ২ নং সিটি কর্পোরেশনের কালশির কয়েকটি বস্তিতে উর্দুভাষী ও বাঙ্গালীদের সাথে কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। ঢাকায় কালশিসহ ২টি হাসপাতাল, ৭টি থানা, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবোনাল ২,৬,৮ ও ৩টি কলেজ এবং ঢাকার বাহিরে ৪টি সহযোগী সংগঠনের মাধ্যমে ৪টি জেলার ৮টি উপজেলা, ১৬টি ইউনিয়ন, ৮টি থানা, ৮টি হাসপাতাল, ৮টি বিদ্যালয়, ৪টি কলেজ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবোনালে কাজ করছে।

নারীপক্ষ ‘নারীর অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ’ প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে সহিংসতার শিকার নারী ও মেয়ে শিশুর প্রতি সমাজের প্রচলিত দৃষ্টিভঙ্গি, আচরণ ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের লক্ষ্যে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, তৃনমূলে নারী,পুরুষ ও কিশোর-কিশোরীদের সাথে কাজ করার পাশাপাশি সরকারের বিভিন্ন সেবা প্রতিষ্ঠান যেমন হাসপাতাল, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও আদালতে বিচার প্রক্রিয়ায় প্রতিবন্ধকতা এবং মান উন্নয়নের জন্য অন্তর্নিহিত সীমাবদ্ধতা চিহ্নিত ও উত্তরণে কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

নারীকে পরিবারে, সমাজে ও রাষ্ট্রে অধিকার সম্পন্ন নাগরিক ও মর্যাদা সম্পন্ন মানুষ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে নারীর অধিকার ও মানবাধিকার বিষয়ে কাজ করা নারীপক্ষ’র সকল কাজের কেন্দ্রবিন্দু। নারীর উপর সকল সহিংসতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ আন্দোলনকে আরো শক্তিশালী করার লক্ষ্যে নারীপক্ষ ১৯৯৭ সালে নারীর উপর সহিংসতার বিশ্লেষণাত্মক একটি সারথী গবেষণা করে। থানা, হাসপাতাল ও আদালত সহিংসতার শিকার নারীর সেবা প্রদানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা পালন করছে। এই প্রেক্ষাপটে নারীপক্ষ রাষ্ট্রীয় কর্মকান্ড অর্থাৎ সহিংসতার শিকার নারীর ঘটনা তদন্ত, সহিংসতার শিকার নারীর মানসিক সহায়তা প্রদান, চিকিৎসা ব্যবস্থা ও আদালতের বিচার প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত ব্যক্তিদের দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণ নিয়মিত পরিবীক্ষণ করার প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে ২০১৯ সালে “নারীর অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ” নামে প্রকল্প হাতে নেয়। এ প্রকল্পের মাধ্যমে নারীপক্ষ সরকারি সেবার মান উন্নয়ন, আইন ও নীতি প্রয়োগ এবং সেবা প্রদানকারীর দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণ নিয়মিত “তৃতীয় পক্ষের” উপস্থিতিতে পর্যবেক্ষণ শুরু করে। পর্যবেক্ষণকৃত তথ্য উপাত্তের উপর ভিত্তি করে অর্ন্তনির্হিত সীমাবদ্ধতা চিহ্নিত হয় এবং পরবর্তীতে এডভোকেসির মাধ্যমে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ১৯৯৫, ২০০০ ও ২০০৩ এর বিভিন্ন পরিবর্তন ও সংশোধনে নারীপক্ষ ভ’মিকা রাখে। সহিংসতার শিকার ব্যক্তির মেডিকোলিগ্যাল/ডাক্তারী পরীক্ষার নীতি পরিবর্তনে সরকারের সাথে যৌথভাবেও কাজ করে। এরই ধারাবাহিকতায় নারীপক্ষ আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, স্বাস্থ্য বিভাগ ও বিচার বিভাগের সাথে একযোগে কাজ করে আসছে। প্রকল্প বাস্তবায়নে সহযোগী সংগঠনকে সাথে নিয়ে অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নারীর অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ প্রকল্প’র জন্য একটি কর্মকৌশল তৈরি করা হয়েছে। এটি এমন একটি কর্মকৌশল যার মাধ্যমে সহিংসতার শিকার ব্যক্তির প্রতি সরকারি প্রতিষ্ঠানের সেবা প্রদানের ধরণ, সরকারি কর্মকর্তাদের আচরণ, সম্পদের সরবরাহ, ব্যবহার ও অপ্রতুলতাসহ যাবতীয় বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করা হয়। পর্যবেক্ষনের ফলে প্রাপ্ত তথ্য উপাত্ত সেবাপ্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের (থানা, হাসপাতাল, আদালত) সাথে আলোচনা করা হয়। যা সেবার মান উন্নয়নে ভৃুমিকা রাখে।
প্রকল্পের লক্ষ্য- নারী ও মেয়ে শিশুর উপর সহিংসতা বন্ধে কথা বলার সহায়ক পরিবেশ তৈরি এবং নির্যাতন বন্ধ করা

প্রকল্প’র ফলাফল-
* সহিংসতার শিকার নারী ও মেয়েদের স্বাস্থ্য সেবা ও আইনগত সেবা পাওয়ার সুযোগ তৈরী হয়েছে
* জেন্ডার এর আলোকে নারীর অধিকার বিষয়ে পুরুষ ও ছেলেরা তাদের মনোভাবনা, আচরণ এবং চর্চার ক্ষেত্রে পরিবর্তিত হয়েছে
* নারী ও তরুণীদের সেবা প্রদানের বিষয়ে স্থানীয় পর্যায়ে সরকারী সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ও মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এবং তথ্য যোগাযোগ ও প্রযুক্তি অধিদপ্তর এর জবাবদিহিতা এবং দায়িত্বশীলতা বৃদ্ধি হয়েছে
* নারীর নিজেদের উপার্জিত অর্থ ও সম্পদের উপর ভোগ ও নিয়ন্ত্রণে সুযোগ তৈরী হয়েছে
* নারীর মানবাধিকার সুরক্ষায় আইন ও নীতিমালা পর্যালোচনা, সংশোধন এবং বাস্তবায়ন হয়েছে

মূল কার্যক্রম –
* বেইজ লাইন সার্ভে
* চিকিৎসা ও আইনি সেবা নিশ্চিত করার জন্য স্টেকহোল্ডারদের সাথে সংলাপ
* দল গঠন (নারী,পুরুষ,কিশোর-কিশোরী, যুবক-যুবতী)
* দিবস উদযাপন ( মানবাধিকার দিবস, আর্ন্তজাতিক নারী দিবস, আর্ন্তজাতিক নারী নির্যাতন প্রতিবাদ দিবস)
* স্থানীয় জনগণ, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, অভিভাবক ও ছাত্রছাত্রীদের সচেতন করার মাধ্যমে সহিংসতা প্রতিরোধে তাদেরকে সম্পৃক্ত করা
* সহিংসতার শিকার নারীর আত্মশক্তি বৃদ্ধি, আত্মনির্ভরশীলতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি বিষয়ক কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ
* প্রতিটি জেলার ২টি থানা, ২টি হাসপাতাল এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল পর্যবেক্ষন
* ঢাকা জেলায় ৭টি থানা. ২টি হাসপাতাল ও ৩টি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল পর্যবেক্ষণ
* নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দায়ের করা ৮০ টি মামলা ফলোআপ
* ফলোআপ মামলার তথ্য নিয়ে গবেষনা প্রতিবেদন তৈরী করে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে এ্যাডভোকেসি করা
* আইন ও পলিসি পর্যালোচনা এবং সরকারের সাথে এডভোকেসি করা
* সরকারী প্রতিষ্ঠান ও নির্বাচিত মামলাসমূহ পরিবীক্ষণ, তথ্য সংগ্রহ ও সীমাবদ্ধতা উত্তরণে এ্যাডভোকেসি করা
* সরকারী আইন সহায়তা তহবিল সক্রিয়করণ এবং এ্যাডভোকেসী

প্রকল্প কর্মএলাকা:

ক্র.নং সংগঠনের নাম ও জেলা কর্মরত উপজেলা কর্মরত থানা কর্মরত হাসপাতাল আদালত
১. নারীপক্ষ, ২নং ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, ঢাকা ১.পল্লবী থানা
২. মিরপুর থানা
৩. তেজগাঁও থানা   ৪. মোহাম্মদপুর থানা
৫. ধানমন্ডি থানা
৬, হাজারীবাগ থানা
৭. শাহবাগ থানা ১. ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
১. ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

২. শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী কলেজ ও হাসপাতাল

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২,৬,৮

সহযোগী সংগঠনের তালিকা ও কর্মএলাকা:

ক্র.নং সংগঠনের নাম ও জেলা কর্মরত উপজেলা কর্মরত থানা কর্মরত হাসপাতাল আদালত
তরঙ্গ মহিলা কল্যান সংস্থা, জামালপুর ১. সদর উপজেলা

২. মেলানন্দহ উপজেলা

১. সদর থানা

২. মেলানন্দহ থানা

১. জামালপুর সদর হাসপাতাল

২. উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, মেলানন্দহ

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল
প্রোগ্রাম ফর উইমেন ডেভেলপমেন্ট (পিডাব্লিউডি) সিরাজগঞ্জ ১.সদর উপজেলা
২. কামারখন্দ উপজেলা
১.সদর থানা

২.কামারখন্দ থানা

১.২৫০ শষ্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল
২. উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কামারখন্দ
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল
হার্টকোর পিপলস ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন(এইচপিডিও, জয়পুরহাট ১.সদর উপজেলা
২.পাঁচবিবি উপজেলা
১.সদর থানা
২.পাঁচবিবি থানা
১. ২আধুনিক জেলা হাসপাতাল, জয়পুরহাট
২.উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পাঁচবিবি
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল
ওয়েরফেয়ার এফোর্টস (উই), ঝিনাইদহ ১.সদর উপজেলা
২.কালিগঞ্জউপজেলা
১. সদর থানা ২.কালিগঞ্জ থানা ১. ঝিনাইদহ সদর হাসপাতাল
২.উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, কালিগঞ্জ
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল

প্রকল্প সমন্বয়কারী: রওশন আরা

কর্মদলের সদস্যবৃন্দ:

  1. রীতা দাশ রায়
  2. গীতা দাস
  3. নাজমুন নাহার শেলী
  4. ফরিদা ইয়াসমিন

Pin It on Pinterest

Share This