Select Page
২০০৫-০৩-০৮
আন্তর্জাতিক নারী দিবস-২০০৫

লিফলেট

”এই হোক সকলের অঙ্গীকার, নারীর প্রতি সহিংসতা নয় আর”

আজ ৮ মার্চ, আন্তর্জাতিক নারী দিবস। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো এ দেশেও পালিত হয় এই দিবসটি। নারী অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ৮ মার্চ-এর অবদান অপরিসীম। সারা বিশ্বে নারী সমাজের জন্য এই দিনটি অধিকার প্রতিষ্ঠার মাইলফলক। আমাদের দেশে নারীর অগ্রগতির ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হচ্ছে সহিংসতা ও তার প্রতি হুমকি। নারীর প্রতি সহিংসতা নারীর স্বাভাবিক জীবনযাপনকে প্রতিনিয়ত ব্যহত করছে। নারী পথে ঘাটে, কর্মস্থলে এমনকি পরিবারেও নিরাপত্তাহীন। নারীদের নিরাপত্তা রক্ষার্থে যাতে সকলে একযোগে কাজ করতে পারে সেই জন্য এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে ‌‌”এই হোক সকলের অঙ্গীকার, নারীর প্রতি সহিংসতা নয় আর”।

১৮৫৭ সালের ৮ মার্চ নিউইয়র্ক শহরের সেলাই কারখানার নারী শ্রমিকদের অমানবিক ও বিপদজনক কর্ম পরিবেশ, দৈনিক বারো ঘন্টা কাজ ও স্বল্প মজুরির বিরম্নদ্ধে প্রতিবাদ এবং পরবর্তীতে বিভিন্নমুখী নারী অধিকার আন্দোলনের ধারাবাহিকতাকে কেন্দ্র করে ১৯১০ সালে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিন ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। ১৯৯১ সাল থেকে প্রতি বছর বাংলাদেশে ৪০টি সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন কমিটি ব্যাপকভাবে দিবসটি পালন করে আসছে।

প্রতিদিন প্রচার মাধ্যমগুলোতে নারী নির্যাতনের অত্যন্ত ভয়াবহ, লোমহর্ষক ও হৃদয়বিদারক খবর প্রকাশিত ও প্রচারিত হচ্ছে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ২০০৪ সালের মার্চ মাসে ২৫টি গণধর্ষণসহ ১০১টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের পর খুন করা হয় ৯ জনকে, যৌতুকের কারণে ২৬ জন খুন হয় এবং ৩৫ জন এসিড নিক্ষেপের শিকার হয়। অনুরূপভাবে এপ্রিল মাসে মোট ১১০টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। যৌতুকের কারণে নির্যাতনের শিকার হয় ৩৪টি এবং এর মধ্যে খুন হয় ২৩ জন। ২১ জন এসিড আক্রামত্ম হয় এবং ২ জনকে অগ্নিদগ্ধ করা হয়। নারী প্রতিনিয়ত যে সহিংসতার শিকার হয়, তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই। ভাষা, পেশা, ধর্ম, জাতিসত্তা ও প্রতিবন্ধী হবার কারণে নারীরা বৈষম্য ও সহিংসতার শিকার হয়।

কর্মক্ষেত্রে নারীর উপস্থিতি বেড়েছে। কিন্তু সেই কর্মস্থলেও নারী বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ও মানসিক হয়রানির শিকার হয়। নারী যে অবস্থানেই থাকুক না কেন, শুধু নারী হবার কারণে প্রতি মূহুর্তে তাকে বৈষম্য, নির্যাতন ও সহিংসতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

নারীর প্রতি সহিংসতা বন্ধের ইস্যুতে জনগণ ও সরকারকে সংবেদনশীল ও সচেতন করে তুলতে নারী ও সামাজিক সংগঠনগুলোর সাথে আপনিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারেন। আসুন-

* পরিবারে নারীর অবস্থানকে গুরম্নত্ব দেই ও তার মতামত গ্রহণ করি।
* নারীকে পূর্ণ সামাজিক মর্যাদা দেই।
* জাতি, ধর্ম, বর্ণ এবং শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী নারী নির্বিশেষে সকলের জন্য সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার দাবী করি।
* পরিবার, সমাজ, কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সকলস্তরে নারীর জন্য সমান সুযোগ দাবী করি।
* কর্মক্ষেত্রে শারীরিক ও যৌন হয়রানির বিরম্নদ্ধে সোচ্চার হই।

আসুন আমরা আজ সারা বিশ্বের নারীর প্রতি সহিংসতার বিরম্নদ্ধে রম্নখে দাঁড়াবার এবং সকল মানুষের নিরাপত্তার জন্য সোচ্চার হবার প্রতিজ্ঞা করি।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন কমিটি
৮ই মার্চের কর্মসূচী:
১) অবস্থান, স্থান: মানিক মিয়া এভিনিউ (টেলিফোন শিল্প সংস্থার কার্যালয় থেকে ধানমন্ডি বালক বিদ্যালয় পর্যমত্ম) সময়: সকাল ৯:০০ টা থেকে ১০:০০।
২) সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, স্থান রবীন্দ্র সরোবর মুক্ত মঞ্চ, ধানমন্ডি। সময়: বিকাল ৪:৪৫ টা থেকে ৫:৪৫ টা।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন কমিটি
নারীপক্ষ
 র‌্যাংগস নীলু স্কোয়ার (৫ম তলা), সড়ক- ৫/এ, বাড়ী- ৭৫, সাতমসজিদ রোড, ধানমন্ডি, ঢাকা-১২০৯, বাংলাদেশ।
জিপিও বক্স-৭২৩, ঢাকা-১০০০, ফোন : ৮৮০-২-৮১১৯৯১৭, ৮১৫৩৯৬৭, ফ্যাক্স : ৮৮০-২-৮১১৬১৪৮
ই-মেইল : naripokkho@gmail.com, ওয়েব : www.naripokkho.org.bd

Pin It on Pinterest

Share This