এ্যাসিড নিক্ষেপ একটি গুরুতর দণ্ডনীয় অপরাধ। যে ব্যক্তি এ্যাসিড দগ্ধ হচ্ছে তার শারীরিক, মানসিক, পারিবারিক ও সামাজিক যে ক্ষতি সাধন হয় তা অপূরণীয়। তাই প্রতিটি নাগরিক সচেতন হউন এবং এ্যাসিড নিক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলুন।
তথ্যের বিবরণঃ
১। এ্যাসিড দেখতে পানির মত, কিন্তু শরীর স্পর্শ করা মাত্রই চামড়া পুড়ে যায় এবং জ্বলতে শুরু করে। এ্যাসিড চামড়া ভেদ করে পেশীতে প্রবেশ করে এবং ক্ষতিসাধন করতে থাকে। সে জন্য এ্যাসিড নিক্ষেপের সঙ্গে সঙ্গে শরীরের আক্রান্ত অংশ প্রচুর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। যতবেশী পানি দিয়ে ধোয়া হবে, এ্যাসিডের শক্তি কমে যাবে এবং শরীরে ক্ষতিসাধন তুলনামূলকভাবে কম হবে।
২। যতশীঘ্র সম্ভব এ্যাসিড দগ্ধ ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিন এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ এ্যাসিড আক্রান্ত ব্যক্তিদের বাংলাদেশে চিকিৎসার সুযোগ খুবই সীমিত। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে একটি বার্ণ ইউনিট আছে, যতশীঘ্র সম্ভব প্রাথমিক চিকিৎসা সেরে দেশের যে কোন প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে এ্যাসিড দগ্ধ ব্যক্তিকে সেখানে আনার ব্যবস্থা করুন।
মনে রাখবেন এ্যাসিড পোড়া ব্যক্তির সুস্থ্য হয়ে উঠার জন্য পরিস্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ও আলো বাতাস খুবই প্রয়োজন। যেহেতু এ্যাসিড নিক্ষেপে ত্বকের ক্ষতি সর্বাধিক হয়, সে জন্য ইনফেকশন প্রতিরোধে নিম্নোক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করুন-
ক) পরিস্কার মশারী টাঙ্গিয়ে রাখুন যাতে রোগীর গায়ে কোন ময়লা না পড়ে
খ) নিয়মিত বাতাস করুন
গ) প্রতিদিন পরিস্কার পানি দিয়ে পোড়া ঘা পরিস্কার করুন
ঘ) প্রচুর পানি ও পুষ্টিকর খাদ্য যেমন, প্রচুর শর্করা ও আমিষ জাতীয় খাবারের ব্যবস্থা করুন
ঙ) ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করবেন।
৩। এ্যাসিড নিক্ষেপ গুরুতর দণ্ডনীয় অপরাধ। এই অপরাধের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। জেনে রাখুন- এটি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে একটি সহিংস অপরাধ সুতরাং রাষ্ট্রই অপরাধ ও অপরাধীর বিরুদ্ধে সকল ব্যবস্থা নিতে বাধ্য। আপনি যে বিষয়ে সহযোগিতা করবেন তাহলো :
ক) যতশীঘ্র সম্ভব পুলিশকে সংবাদ দিন, ফোনে বা স্ব-শরীরে বা যে কারো মারফৎ
খ) অপরাধীদের সংখ্যা কত নিরূপণ এবং সনাক্ত করুন
গ) কখন, কোথায়, কিভাবে ঘটনা ঘটেছে তা লিপিবদ্ধ করুন এবং পুলিশকে জানান
ঘ) এ্যাসিড দগ্ধ ব্যক্তির উপর পূর্ব হুমকি বা পূর্ব শত্রুতা ছিল কিনা এ বিষয় জেনে নিন
ঙ) আলামত, চিহ্ন সংগ্রহে পুলিশকে সহায়তা করুন
চ) থানায় মামলা রজ্জু হয়েছে কি না নিশ্চিত করুন
ছ) সরকারী উকিল (পিপি) আদালতে আপনার মামলা চালাবেন। আপনার নিজ খরচে উকিল নিয়োগ দেবার প্রয়োজন নেই।