Select Page
২০২৪-০৪-৩০
লালন সঙ্গীতের অপব্যাখ্যা করে “ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত” এর অজুহাতে গ্রেফতার ও হয়রানির তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানাচ্ছে নারীপক্ষ

১৭ বৈশাখ ১৪৩১/৩০ এপ্রিল ২০২৪

পত্রিকা ও বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা যায়, আমাদের সঙ্গীত ও সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ বাউল সাধক লালন- এর “সবলোকে কয় লালন কি জাত সংসারে …” গানের দুটি লাইন লিখে নিজের ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় “ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত”- এর মৌখিক অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় গত ২৮ এপ্রিল ২০২৪ শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার মহিষার ইউনিয়নের হরি নারায়ণ রক্ষিতের ছেলে সঞ্জয় রক্ষিতকে (৪০) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। লালন সঙ্গীতের অপব্যাখ্যা করে “ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত” এর অজুহাতে এই গ্রেফতার ও হয়রানি আমাদের শাশ্বত সংস্কৃতিকে ধ্বংসের ষড়যন্ত্র। এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে নারীপক্ষ ।

দেশে এই ধরনের ঘটনা এটাই প্রথম নয়, এর আগেও “ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত”- এর অজুহাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের আওতায় বেশ কয়েকজনকে- বিশেষ করে ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষকে গ্রেফতার, নির্যাতন, হয়রানি এবং কিছু স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি দ্বারা জ্বালাও-পোড়াওসহ অনেক সহিংস ঘটনা ঘটেছে, যা মানুষের নাগরিক অধিকারকে ক্ষুন্ন করেছে।

স্বাধীন দেশের একজন নাগরিক যেকোনো মাধ্যমে তার মতামত স্বাধীনভাবে প্রকাশ করবে বা সংস্কৃতির চর্চা করবে এটা তার নাগরিক অধিকার। তাছাড়া, যেখানে প্রমাণসহ লিখিত অভিযোগের বিষয়গুলোও প্রায়শই গুরুত্ব পায় না সেখানে এমন একটি অহেতুক মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্ট এই কর্মকর্তার এই অতি তৎপরতা তার ক্ষমতার অপব্যবহার এবং আমাদের সংস্কৃতি ধ্বংসের প্রবণতারই বহিঃপ্রকাশ।

‘ধর্মীয় অনুভূতি’র বিষয়টি অত্যন্ত আপেক্ষিক এবং যার যার ব্যক্তিগত বিষয়। কোন যুক্তিসঙ্গত বক্তব্য বা বাস্তব বিষয়ে কথা বললে অথবা মতামত প্রকাশ করলেই তাকে ধর্মের সাথে যুক্ত করাটা নিছক উষ্কানি ছাড়া আর কিছুই নয়। এরজন্য কেউ কারো বিরুদ্ধে যেনতেনভাবে অভিযোগ তুললেই তাকে গ্রেফতার, হয়রানি বা কোন প্রকার নির্যাতন করা সম্পূর্ণ অমানবিক এবং আইনের অপব্যবহারমাত্র।

নারীপক্ষ’র দাবি, সঞ্জয়কে অনতিবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়া এবং তার বিরুদ্ধে করা অহেতুক ও মিথ্যা অভিযোগ সম্পূর্ণরূপে তুলে নেয়া হোক। নারীপক্ষ আরও দাবি জানাচ্ছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অপব্যবহার রোধে সরকার কর্তৃক দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। সেইসাথে নারীপক্ষ দেশের সাধারণ মানুষ এবং সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহবান জানাচ্ছে, এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে প্রত্যেকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে উদ্যোগী হোন, সচেতন থাকুন।

বার্তা প্রেরক,

সাফিয়া আজীম
আন্দোলন সম্পাদক, নারীপক্ষ।

Pin It on Pinterest

Share This