২৯ চৈত্র ১৪২১/১২ এপ্রিল ২০১৫
বরাবর
হাসানুল হক ইনু
মাননীয় মন্ত্রী,
তথ্য মন্ত্রণালয়, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
ভবন- ৪, বাংলাদেশ সচিবালয়
ঢাকা- ১০০০
বিষয়: পহেলা বৈশাখকে কেন্দ্র করে ইলিশের বাহারী পদ তৈরির বিজ্ঞাপন ও প্রচার-প্রচারণা বন্ধে জারুরী কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবী
মহোদয়,
আমরা উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, প্রতি বছর ১লা বৈশাখ বাংলা নববর্ষকে কেন্দ্র করে ব্যাপক হারে ইলিশ নিধন চলে, যা জাতীয় সম্পদ বিনষ্ট করে এবং দেশের মানুষকে পুষ্টিহীনতার ঝুঁকিতে ফেলে। এই ব্যাপারে মৎস্য অধিদপ্তরের আবেদন ও প্রচার প্রশংসাযোগ্য, তবে এতে নগরবাসী উচ্চ ও মধ্যবিত্ত মানুষের বাঙালি ঐতিহ্যের নামে বাংলা নববর্ষকে কেন্দ্র করে ইলিশ খাওয়ার ধুম বন্ধ হচ্ছে না।
আশির দশক থেকে বিশেষতঃ ঢাকায় ১লা বৈশাখে ঘটা করে পান্তা-ইলিশ খাওয়ার প্রচলন শুরু হয়। তারপর থেকে এর প্রসার ও প্রচার ঘটতে থাকে এবং এটি এখন রেওয়াজে পরিণত হয়েছে। এর সুযোগে জেলে ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা যেমন কোন নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই অতি মুনাফার লোভে নির্বিচারে জাটকা থেকে শুরু করে ছোট-বড় সকল ধরনের ইলিশ ধরছে ও বাজারজাত করছে, তেমন ক্রেতারাও চেতনে-অচেতনে ইলিশ কেনায় মেতে উঠছে। অন্যদিকে বিভিন্ন পত্রিকা, ম্যাগাজিন ও টিভি চ্যানেলে ইলিশ রান্নার নানা লোভনীয় রসনাতৃপ্ত রকমারি প্রণালী প্রচার এহেন বিবেচনা বিবর্জিত আচরণকে আরো উৎসাহিত করছে।
আমরা মনে করি, কেবল জেলেদের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে ইলিশ নিধন যজ্ঞ বন্ধ হবে না, এর বাজারজাতকরণ এবং ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রেও যথাযথ নির্দেশনা দেওয়া ও এর বাস্তবায়নে সরকারকে দৃঢ় কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে; সেই সাথে পত্রিকা, ম্যাগাজিন ও টিভি চ্যানেলে পহেলা বৈশাখের প্রারম্ভে ইলিশ রান্নার অনুষ্ঠান প্রচার বন্ধে এবং জনসচেতনতা তৈরির জন্য সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে।
এ বিষয়ে গত বছরও আমরা আপনার কাছে পত্র দিয়েছি কিন্তু তার কোন ফলাফল এ পর্যন্ত আমরা দেখতে পাইনি। আমরা আশা করি, পত্রিকা, ম্যাগাজিন ও টিভি চ্যানেলে পহেলা বৈশাখের প্রারম্ভে ইলিশ রান্নার নানা পদ তৈরির প্রচার অনুষ্ঠান বন্ধে ও জনসচেতনতা তৈরির জন্য বিশেষ বার্তা প্রচারে আপনার মন্ত্রণালয় থেকে দ্রম্নত কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
ধন্যবাদসহ,
ফিরদৌস আজীম
আন্দোলন সম্পাদক
নারীপক্ষ