Select Page
২০১৭-০৮-০৭
শিশুসহ দেশব্যাপী অবিরাম নারীধর্ষণ এখনই প্রতিহত করুন

স্মারক নং- না.প- ০৮/২০১৭- ১১০

২৩ শ্রাবণ ১৪২৪/৭ আগস্ট ২০১৭


শিশুসহ দেশব্যাপী অবিরাম নারীধর্ষণ এখনই প্রতিহত করুন


দেশব্যাপী একের পর এক ঘটেই চলেছে নারী ও শিশু ধর্ষণ এবং যৌননির্যাতন। সংবাদ মাধ্যমে অনেক খবর আমরা জানি, তবে একথা নিশ্চিত অনেক ঘটনা অপ্রকাশিতই থেকে যায়। লোকলজ্জা, হয়রানির ভয় বা নানাবিধ চাপের কারণে ধর্ষণের শিকার নারী বা তার ভুক্তভোগী পরিবার এইসব ঘটনা প্রকাশ বা মামলা করেন না।

ধর্ষণের নৃসংশতা থেকে রেহাই পাচ্ছে না স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী, গৃহবধূ, প্রতিবন্ধী নারী, অন্তঃসত্তা নারী, এমনকি দুই/আড়াই বছরের শিশুও। শুধু চলতি বছরের প্রথম সাত মাসে শিশু ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ৩৫২টি। মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র এর তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে ২৮০ নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়। আরও ৩৯ জনকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ১৬ জনকে। আবার ধর্ষণের শিকার নারী আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন পাঁচজন। সর্বশেষ গত ৩০ জুলাই পুলিশ সদর দপ্তরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে সারাদেশে ধর্ষণের মোট মামলা হয়েছে ১ হাজার ৯১৪টি। এপ্রিল-জুন ২০১৭, সারাদেশে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ১১০৯টি, অর্থাৎ প্রতিদিন গড়ে ১২টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে।

সবচেয়ে ভয়াবহ দিক হলো, এইসকল অপরাধে অভিযুক্তদের একটি বড় অংশ ক্ষমতাসীন দলের অঙ্গসংগঠনভুক্ত নেতা-কর্মী। তাদের অনেকে গ্রেফতারই হয়না; আবার কেউ গ্রেফতার হলেও বিচার দীর্ঘায়িত হয় বা দলীয় প্রভাব-প্রতিপত্তি, অর্থবিত্ত আর ক্ষমতার জোরে আইনের ফাঁকফোকর গলে বেরিয়ে যায়।

একদিকে বিরাজমান বিচারহীনতার অপসংস্কৃতি, আইনের শাসনের অভাব, পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জবাবদিহীতাহীনতা, সীমাহীন দুর্নীতি ও অনিয়ম এবং প্রভাবশালীদের অর্থবিত্ত ও ক্ষমতার দাপট, রাজনৈতিক প্রভাব-প্রতিপত্তি, দলীয় পক্ষপাতিত্ব, ইত্যাদির সুযোগ; অপরদিকে মানুষের মধ্যে নীতি-নৈতিকতা বিবর্জিত নির্লজ্জ ভোগবাদের চর্চা এবং মানবিকতার চরম অবক্ষয়ের কারণে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি চলছেই।

দেশের এহেন পরিস্থিতিতে আমরা ক্রুদ্ধ, ক্ষুব্ধ, উদ্বিগ্ন এবং শঙ্কিত। সরকার দেশে জঙ্গী তৎপরতা দমনে যে পরিমান উৎসাহ, উদ্যোগ দেখিয়েছেন তার সিকি পরিমান উদ্যোগ কাজে লাগিয়ে নারীকে মানুষ হিসেবে চিনতে, জানতে ও সম্মান করতে স্কুল-কলেজ, ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে শিখানোতে ব্যয় করলে চিরস্থায়ী সুফল পাওয়া যাবে। নারী ও মেয়েশিশুর উপর যে অবিরাম নৃসংশ ধর্ষণ, অত্যাচার, নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে তার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গোটা সমাজ। আমরা আশা করবো, নারীর উপর ধর্ষণ, যৌন-নির্যাতনসহ সকল প্রকার সহিংসতা বন্ধে সরকার তার সর্ব্বোচ্চ মনোযোগ, গুরুত্ব এবং ক্ষমতা আরোপ করে অতি দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিবেন।

বার্তা প্রেরক

রীনা রায়
আন্দোলন সম্পাদক, নারীপক্ষ।

Pin It on Pinterest

Share This