স্মারক নং- না.প- ০১/২০১৯- ২৭৭
২ মাঘ ১৪২৫/১৫ জানুয়ারি ২০১৯
প্রতিবাদ বিবৃতি
সুবর্ণচরে গৃহবধূকে ধর্ষণ ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্ত প্রতিবেদন অগ্রহণযোগ্য এবং ক্ষমতাসীন দলের নির্বাচনী সহিংসতা ও অনিয়ম-দুর্নীতিকে আড়াল করার পায়তারা
গত ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা প্রতীকে ভোট না দেওয়ায় ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ ভোররাতে নোয়াখালীর সুবর্ণচরে এক গৃহবধূকে আওয়ামী লীগ এর স্থানীয় নেতা এবং চর জুবিলি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য রুহুল আমীন গং কর্তৃক সঙ্ঘবদ্ধ ধর্ষণ বিষয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে নারীপক্ষ তা প্রত্যাখ্যান করছে। এই প্রতিবেদন ক্ষমতাসীন দলের নির্বাচনী সহিংসতা ও অনিয়ম-দুর্নীতিকে আড়াল করা এবং অপরাধীদের সঠিক বিচারের বাইরে রাখার পায়তারা। নারীপক্ষ এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
যেখানে দেশের প্রায় সকল প্রচারমাধ্যম ও বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন ও মানবাধিকার সংস্থা সরেজমিন পরিদর্শনে এর সত্যতা পেয়েছেন এবং সবচেয়ে বড় কথা হলো, ধর্ষণ ও সহিংসতার শিকার ঐ নারী নিজে এই অপরাধীদের সনাক্ত করেছেন এবং বলেছেন যে, ভোটকেন্দ্রে রুহুল আমীন তাকে নৌকা প্রতীকে ভোট দেয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেছেন এবং তাতে রাজী না হওয়ায় দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছেন। অথচ কমিশনের তদন্ত দল এর কোন সত্যতা খুঁজে পেলেন না- এটা অবিশ্বাস্য। তারা তাদের প্রতিবেদনে এই ঘটনাকে পূর্ব শত্রুতার জের এবং মানবাধিকার লঙ্ঘন বলে উল্লেখ করছেন! যদি পূর্বশত্রুতাই হবে তাহলে তারা শত্রুতা মিটানোর জন্য এই নির্বাচনকেই বেছে নিল কেন? ধর্ষণ, সহিংসতা, লুটপাট ফৌজদারি অপরাধ। বরং জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এই প্রতিবেদনের মাধ্যমে বিচার প্রাপ্তিতে অন্তরায় সৃষ্টি করে পারুল বেগমের মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। কমিশনের এই ভূমিকা ও আচরণে নারীপক্ষ অত্যন্ত ক্ষুব্ধ এবং উদ্বিগ্ন।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান, যার উপর প্রত্যেক নাগরিকের মানবাধিকার সুরক্ষার দায়িত্ব ন্যাস্ত করা হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠান যেকোন ধরনের পক্ষপাতিত্ব ও সকল প্রকার চাপ, প্রভাব-প্রতিপত্তির ঊর্ধ্বে থেকে মানুষের কল্যাণে সত্য ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে কাজ করবে- এটা তার দায়িত্ব।
ধন্যবাদসহ,
ফরিদা ইয়াছমিন
আন্দোলন সম্পাদক
নারীপক্ষ।