Select Page
২০২০-০৯-১৬
সৌদি আরবে চরম নির্যাতনের শিকার ছোট্ট কুলসুমকে লাশ হয়ে ফিরতে হলো দেশে! -আর যেন কোন কুলসুমকে লাশ হয়ে দেশে ফিরতে না হয়

স্মারক নং- না.প- ০৯/২০২০- ১২৮

১ আশ্বিন ১৪২৭/১৬ সেপ্টেম্বর ২০২০


প্রতিবাদ বিবৃতি

সৌদি আরবে চরম নির্যাতনের শিকার ছোট্ট কুলসুমকে লাশ হয়ে ফিরতে হলো দেশে!
-আর যেন কোন কুলসুমকে লাশ হয়ে দেশে ফিরতে না হয়


পরিবারে একটু সুখ-শান্তির আশায় সৌদি আরবে গিয়েছিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার গোর্কণ ইউনিয়নের ১৪ বছরের কিশোরী কুলসুম। সেখানে গিয়ে চাকরি আর বেতনের পরিবর্তে তাকে গৃহকর্তা ও তার ছেলের দ্বারা চরম নির্যাতনের শিকার হতে হয় এবং অবশেষে গত ৯ আগস্ট ২০২০ সৌদি আরবের একটি হাসপাতালে মারা যায় ছোট্ট কুলসুম। ১১ সেপ্টেম্বর ২০২০ দিবাগত রাত দেড়টার দিকে তার মরদেহ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসে। পরেরদিন তার মরদেহ নিজ গ্রামের বাড়িতে পৌঁছায়। নিহতের বাবার অভিযোগ, স্থানীয় দালাল রাজ্জাক মিয়ার মাধ্যমে ৩০ হাজার টাকা খরচ করে ১৭ মাস আগে মেসার্স এম এইচ ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে কুলসুমকে গৃহকর্মীর কাজে সৌদি আরব পাঠানো হয়। সেখানে গৃহকর্মী হিসেবে যোগদানের পর থেকেই কুলসুমের ওপর নির্যাতন শুরু করে মালিকপক্ষ। নির্যাতনের কারণে মেয়েকে ফিরিয়ে আনার জন্যে রিক্রুটিং এজেন্সির সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করার পরও তাদের পক্ষ থেকে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। চার মাস আগে সৌদি আরবে গৃহকর্তা ও তার ছেলে মিলে কুলসুমের দুই হাঁটু, কোমর ও পা ভেঙে দেয়। এর কিছুদিন পর একটি চোখ নষ্ট করে রাস্তায় ফেলে দেয়। পরে সৌদি আরবের পুলিশ তাকে উদ্ধার করে সেখানকার কিং ফয়সাল হাসপাতালে ভর্তি করে। গত ৯ আগস্ট ২০২০ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় কুলসুম। এই ঘটনায় নারীপক্ষ অত্যন্ত ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ। নারীপক্ষ এরজন্য দায়ী প্রত্যেকের যথাযথ বিচার এবং এইধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে জরুরীভিত্তিতে সকল পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছে।

আমরা জানি, এটি কেবল একজন কুলসুমের একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, অনেক কুলসুমদের ধারাবাহিক ঘটনা। গতবছর সৌদি আরবসহ বিশে^র বিভিন্ন দেশ থেকে ৩৫ হাজারের বেশী কর্মী ফেরত এসেছেন, যারমধ্যে নারীকর্মীর সংখ্যা ছিলো প্রায় এক হাজার। ১১৯ জন নারীকর্মীর লাশ এসেছে। এদের একটা বড় অংশই নানা ধরনের অত্যাচার-নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করেছে।

আর যেন কোন কুলসুমকে লাশ হয়ে বা কোন অভিবাসী কর্মীকে নির্যাতন-নিপীড়নের শিকার হয়ে দেশে ফিরে আসতে না হয়- এরজন্য সরকারের কাছে নারীপক্ষ’র দাবি, সরকারি, বেসরকারি- উভয় ক্ষেত্রে বিদেশে কর্মী পাঠানোর সুনির্দিষ্ট ও নারীবান্ধব নীতিমালা প্রণয়ন ও এর যথাযথ বাস্তবায়ন এবং প্রবাসী কর্মীদের জীবনের নিরাপত্তা বিধান করুন। অভিবাসী কর্মী যাতে সহজেই নিজ দেশীয় দূতাবাসের সাথে যোগযোগ করতে পারে তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করুন এবং সমস্যা সমাধানে অতি দ্রæত পদক্ষেপ নিন। দালালচক্রের তৎপরতা বন্ধে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সচেষ্ট হোন ও সর্বোচ্চ মনোযোগ দিন এবং আশু পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।

তামান্না খান
আন্দোলন সম্পাদক
নারীপক্ষ।

Pin It on Pinterest

Share This