স্মারকনং- না.প- ০৯/২০২০- ১৩৪
১১ আশ্বিন ১৪২৭/ ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২০
প্রতিবাদ বিবৃতি
সারা দেশে ঘটেই চলেছে ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ভয়ঙ্কর ঘটনা! সরকার ও প্রশাসন নির্বিকার!
গতকাল শুক্রবার, ২৫ সেপ্টেম্ব ২০২০ সিলেটের সরকারি এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে ঘুরতে আসা এক দম্পতির স্বামীকে অস্ত্রের মুখে নিজ গাড়িতে আটকে রেখে স্ত্রীকে জোরপূর্বক একটি ছাত্রাবাসে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণ করে ঐ ছাত্রাবাসের ছাত্রলীগের ৬/৭ জন প্রাক্তন কর্মী। ২৪ সেপ্টেম্বর দিবাগত মধ্যরাতে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ১নং “বলপিয়ে আদাম” গ্রামে এক মানসিক প্রতিবন্ধী নারীকে নিজ বাড়িতে তার বাবা-মাকে বেঁধে রেখে তাদের সামনে ৯জন সেটলার বাঙালী দলবদ্ধ ধর্ষণ করে এবং তাদের টাকাপয়সা ও সোনাগয়না লুট করে নিয়ে যায়। এই দুটি ঘটনার কোন অপরাধীই এখনো পর্যন্ত গ্রেফতার হয়নি! গত ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০ সন্ধ্যায় সাভারে অসুস্থ কিশোরী নীলা রায়কে তার ভাই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে এলাকায় মিজানুর রহমান নামের এক যুবক অস্ত্রের মুখে ছিনিয়ে নিয়ে হত্যা করে। ঘটনার ৫/৬দিন পর পুলিশ অপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়! ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার শালবেষ্টিত পেগামারী গ্রামের গারো আদিবাসী নারী বাসন্তী রেমার কলা ক্ষেতের প্রায় পাঁচশত কলাগাছ কেটে ফেলে মধুপুর বন বিভাগ। এমন আরো অসংখ্য নারী ধর্ষণ, হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনা ঘটেই চলেছে, যার কিছু প্রকাশ-প্রচার হচ্ছে, আবার অনেক ঘটনাই অপ্রকাশ্য থেকে যাচ্ছে; অথচ সরকার ও প্রশাসন ভয়ঙ্করভাবে নির্বিকার ও নির্লিপ্ত! নারীপক্ষসহ দেশের অন্যান্য নারীসংগঠন এবং বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও নাগরিক সমাজ বার বার সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও এই বিরামহীন ধর্ষণ ও নারীনির্যাতন প্রতিরোধে তাদের কোন কার্যকর পদক্ষেপ এখনো পর্যন্ত পরিলক্ষিত হচ্ছে না!
এহেন পরিস্থিতিতে নারীপক্ষ চরম হতাশ, ক্ষুব্ধ এবং শঙ্কিত। সরকারের কাছে নারীপক্ষ’র দাবি, অনতিবিলম্বে প্রতিটি ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে বিচার নিশ্চিত করুন এবং ঘটনা প্রতিরোধে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিন। নারীসহ প্রতিটি নাগরিকের নিরাপদ জীবন ও জীবিকার নিশ্চয়তা বিধানে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করুন।
সেই সাথে নারীপক্ষ সর্বমহলের প্রত্যেকের প্রতি আহবান জানাচ্ছে, ধর্ষণ এবং নারীর উপর যে কোন ধরনের নির্যাতনের বিরুদ্ধে নিজ নিজ অবস্থান থেকে রুখে দাঁড়ান, প্রতিরোধ গড়ুন, প্রতিবাদ করুন।
তামান্না খান
আন্দোলন সম্পাদক
নারীপক্ষ।