“নুসরাত হত্যা ও নারীর উপর সহিংসতার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ বন্ধন” কর্মসূচী আজ ৩ বৈশাখ ১৪২৬/১৬ এপ্রিল ২০১৯ মঙ্গলবার ৪.৩০মি: থেকে ৫.৩০মি: পর্যন্ত নারীপক্ষ কার্যালয়ের (ধানমন্ডি ৫/এ, সাতমসজিদ রোড) সামনে এবং একইসাথে ঢাকার বাইরে দেশের বিভিন্ন জেলায় ‘দুর্বার’ নেটওয়ার্ক ও সহযোগী সংগঠন এর মাধ্যমে পালন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য শরীরের প্রায় ৮৫ ভাগ পুড়ে যাওয়া ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি চারদিন জীবন-মরণ যুদ্ধ করে গত ১০ এপ্রিল ২০১৯ মারা যায়। এই মাদ্রাসার অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে তার উপর হওয়া যৌন নিপীড়নের মামলা প্রত্যাহার করতে রাজি না হওয়ায় অধ্যক্ষের অনুসারীরা ছাত্রীটির গায়ে দাহ্য পদার্থ ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
দেশে আইনের শাসনের অভাব, বিচারহীনতা, ক্ষমতাসীনদের প্রভাব-প্রতিপত্তি, অনিয়ম, দুর্নীতি, দুঃশাসন ইত্যাদি কারণে এই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটে চলেছে। আমরা বার বার এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি এবং ঘটনার দ্রুত নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে অভিযুক্তদের বিচারের আওতায় আনার দাবি করে আসছি। তথাপি সরকারের তরফ থেকে কার্যকর কোন উদ্যোগ গ্রহণ দৃশ্যমান নয়। নারীপক্ষ নারীর উপর সকল প্রকার সহিংসতা বন্ধ করতে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠাসহ সকল অপরাধ, অপকর্ম এবং অরাজকতা দূর করতে সরকারের সর্বমহলের প্রতি পুনরায় জোর দাবি জানাচ্ছে। নারীপক্ষ আরও দাবি করছে,
কর্মসূচীতে নিম্নলিখিত দাবীগুলো জানানো হয়:
- অনতিবিলম্বে নুসরাত হত্যার নিরপেক্ষ তদন্ত, অভিযুক্ত প্রত্যেককে আইনের আওতায় এনে দ্রুত বিচারের সম্মুখীন এবং এর ফলাফল জনসমক্ষে প্রকাশ করুন
- সোনাগাজী থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেনকেও আইনের আওতায় এনে বিচারের সম্মুখীন করুন
- উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনতিবিলম্বে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি গঠন এবং মহাপরিচালকের দপ্তর ও জেলা, উপজেলা শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমে নিয়মিত কার্যকর পরিবীক্ষণ চালু করুন
- কেবল অপরাধীর বিচার নয়, ক্ষতিগ্রস্থ নারীর মানসিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং শারীরিক ক্ষতিপূরণ বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে যৌন আক্রমন, হয়রানি, ধর্ষণসহ নারীর উপর সহিংসতা প্রতিরোধ সংক্রান্ত সকল আইন ও বিধান সংশোধন করুন
- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অবস্থানকালে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকের মুখমন্ডল সম্পূর্ণরূপে অনাবৃত রাখার বিধান চালু করুন
- নারীকে মানুষ ভাবতে, মানুষ হিসেবে চিনতে এবং তার প্রতি সম্মানজনক আচরণ করতে সমাজমানসের স্থায়ী পরিবর্তন ঘটাতে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য দীর্ঘ মেয়াদী কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ এবং সকল ধরনের প্রচারমাধ্যমে সার্বক্ষণিক প্রচার-প্রচারণা চালু রাখুন।
উক্ত বিক্ষোভ বন্ধনে ব্যানার, ফেষ্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাড়ানোর হয় এবং ‘নারীর উপর সহিংসতা বন্ধ হোক এখনই’ শিরোনামে একটি প্রচারপত্র বিতরণ করা হয়।